খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১৫
  ময়মনসিংহে ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের মৃত্যু
  এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যা নিয়ে দুনিয়ার সামনে গর্ব করা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা-বিপণনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

মাদ্রাসা অধ্যক্ষের জবানিতে ইউনিয়ন পরিষদে তুলে নিয়ে নির্যাতনের দিনের ঘটনা (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক

কয়রা উত্তরচক আমিনিয়া বহুমুখী কামিল মাদরাসা ঢাকার ইসলামিক অ্যারাবিক ইউনিভার্সিটির আওতাভুক্ত। তিনমাস আগে মাদরাসাটিতে সভাপতির দায়িত্ব দেয়ার জন্য ঢাকা থেকে তিনজনের নাম চাওয়া হয়েছিল। তখন অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান কয়রা সদরের বর্তমান চেয়ারম্যান বাহারুলের কাছে যান। তিনি এ দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না । তখন অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে দেন তিনি। পরবর্তীতে অর্থনৈতিক কারণে সভাপতির পদ গ্রহণ করতে রাজি হয় চেয়াম্যান। বারবার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে অধ‌্যক্ষকে। বাহারুলের নাম যুক্ত করে একটি তালিকা তৈরি করে ঢাকায় প্রেরণ করা হলে সেখান থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। এঘটনায় ক্ষুব্ধ হতে থাকে চেয়ারম্যান বাহারুল। পরে অধ্যক্ষকে শায়েস্তা করার জন্য নেওয়া হয় চেয়ারম্যানের অস্থায়ী টর্চার সেলে। সেখানে চেয়াম্যানের উপস্থিতিতে চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। শুধু নির্যাতন করেই ক্ষ্যন্ত হয়নি কয়রা সদরের চেয়ারম্যান, পরবর্তীতে অধ্যক্ষর বাড়িতে গিয়ে বৃদ্ধ মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বাড়ি ভাংচুর করা হয়। জীবনের নিরাপত্তায় নিয়ে এখন শঙ্কিত তিনি।

শুক্রবার দুপুরে খুলনা গেজেটকে অধ্যক্ষ মাসুদ বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালে শ্রেণি কক্ষে ছিলেন তিনি। দুপুুর সোয়া ১২ টার দিকে চেয়ারম্যান বাহারুল ও মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মোস্তফা আব্দুল মালেকের নির্দেশে মো: ইউনুসুর রহমান বাবু, মো: নিয়াজ, মাসুদুর রহমান, মিলন হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রিয়াল, আমিরুল, অমিত মন্ডল, রফিকুল গাজী ও সাদিকসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন মোটরসাইকেলযোগে মাদরাসা প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে। তার নাম উল্লেখ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।’

‌তি‌নি আবও ব‌লেন, ‘চেয়ারম্যানের সহযোাগী বাবু জামার কলার ধ‌রে টেনে চেয়ার থেকে তুলে টেনে হেচড়ে বেব করে। এসময় উল্লিখিতরা আমার নাক, কান ও মাথা বরাবর আঘাত করতে থাকে। তারপর মোটরসাইকেলে করে আমাকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে নিয়ে যায় তারা। সেখানে চেয়ারম্যানের অস্থায়ী টর্চার সেল আছে। চেয়ারম্যান আমাকে দেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে। পরে তিনি আরও তিনজনকে তাকে মারতে বলে। প্রায় একঘন্টা ধরে চলে তার ওপর অমানু‌ষিক নির্যাতন। এসময় মুক্তির জন্য ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বাহারুল। হুংকার দিয়ে বলে জীবনে শেষ করে ফেলা হবে। চাকরী থেকে পদত্যাগ কর, নাহলে রাস্তায় যতবার বের হবি ততবার পিটানো হবে।’

অধ্যক্ষ মাসুদকে তুলে নেওয়ার ঘটনা মাদরাসার একজন সহকর্মী ফোনে তার স্ত্রীকে জানান। স্ত্রী পুলিশসহ ওই টর্চার সেলে হাজির হন। তাকে পুলিশের জিম্মায় না ছেড়ে স্ত্রীর জিম্মায় ছাড়া হয়। তিনি আরও বলেন, বাহারুল তাকে মেরে ক্ষ্যান্ত হয়নি। তার গ্রামের বাড়ির ইসলামপুরে গিয়ে বাড়ি ভাংচুর ও তার বৃদ্ধ মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। রাতে চেয়ারম্যান আটক হলেও তার সহযোগীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অনবরত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

অধ‌্যক্ষ জানান, মারধর করার পর চিকিৎসা কাজে সহায়তা করার অপরাধে মাদিনাবাদ মাদরাসার শিক্ষক আ: রাজ্জাককে ধরে নেওয়া হয় বাহারুলের অস্থায়ী টর্চার সেলে। সেখানে তাকে হুমকি প্রদান করে চেয়ারম্যান। পরে তাকে মাসুদের স্ত্রীকে অভিযোগ উঠিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বেশ শঙ্কিত ব‌লে খুলনা গে‌জেট‌কে আরও জানান।

খুলনা গেজেট / আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!