যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বৃহত্তম ঝাঁপা বাওড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। স্থানীয় দুই যুবলীগ সভাপতির নেতৃতে উক্ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এতে করে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবন চরম ঝুঁকিতে পড়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার হচ্ছেনা বলে ভূক্তভোগিসহ এলাকাবাসির জানান।
অভিযোগ রয়েছে, ড্রেজার মেশিন দিয়ে ঝাঁপা বাওড় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের পাশেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি আবাসিক ভবন। বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক ইমরান হোসেন ও আবুল হোসেন জানান, সাতক্ষীরার তালা থেকে তাদেরকে দিনে দুই হাজার টাকায় ভাড়া করে আনা হয়েছে। গত ১০ দিন ধরে বালু উত্তোলনের কথা জানিয়ে তারা বলেন, ইমরান খান পান্না ও সোহেল রানা নামের দুই ব্যক্তি তাদেরকে দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। জানাযায়, ইমরান খান পান্না উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং সোহেল রানা ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
জানতে চাইলে, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইমরান খান পান্না বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজে এ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অপর যুবলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, বালি উত্তোলন করলে বিদ্যালয় অথবা আবাসিক ভবনের ক্ষতি হয় তা আমাদের জানা নেই।
রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বালু উত্তোলনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, বাওড়ের মাঝখান থেকে বালু তোলা হলে ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর তেমন কোন ক্ষতি হবে না।
অবশ্য আইন রয়েছে, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪ ধারার ৮ উপ-ধারায় ও ৫ ধারার ৩ উপ-ধারায় তীর ভাঙ্গন, আবাসিক ভবন, বাঁধ, সেতু, কালভার্ট, সড়ক-মহাসড়কের ক্ষতি হতে পারে এমন আশংকায় ‘পাম্প বা ড্রেজার মেশিন দিয়ে ‘ভূ-গর্ভস্থ্য বা তলদেশ হইতে বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এখানে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ক্ষমতার দাপটে এ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বালু উত্তোলনের ঘটনা নিয়ে নানা আশংকায় এলাকাবাসী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না। তারপরও স্থানীয় অনেকেই এ বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য দাবি জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, উক্ত বালু উত্তোলনের বিষয়টি তিনি জানেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোঃ তমিজুল ইসলাম খান বলেন, যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন সে যেই হোক না কেন তদন্তপূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই