‘ভিক্ষে করবনা ভাইজান, এট্টা খবর লিখে দেন কেউ যদি দয়া করে আমারে একখান ভ্যান কেনার ব্যবস্থা করে দেয় তাহলি আমি এক পা দিয়ে ভ্যান চালায়ে উপার্জন করে খাতি পারব।’
উপরের সহজসরল অসহায় আকুতিটি করেছেন সড়ক দুর্ঘটনায় এক পা হারানো নির্মাণ শ্রমিক রুহুল আমীন মোড়লের করুন।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর শহরের এক বস্তিতে পরিবার পরিজন নিয়ে ভাড়া থাকেন তিনি। স্ত্রী আর দুই মেয়েকে নিয়ে ৪ জনের সংসার তার, একমাত্র ছেলে বিয়ে করে আলাদা থাকে।
সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয়ে শক্ত সামর্থ শ্রমিক রুহুল আমীন আজ অসহায় দানের পাত্র হয়ে বেঁচে আছেন।
সড়ক দূর্ঘটনার সেই বর্ণনা দিচ্ছিলেন ষাটোর্ধ এই হতভাগা। তিনি জানান, গত ২২ জুলাই সকালে বাইসাইকেল চালিয়ে কাজে যাচ্ছিলেন রুহুল আমীন। চুকনগর-যশোর মহাসড়কের নরনিয়া কাটাখাল ব্রীজ পার হলে পিছন থেকে একটি বাঁলুবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় মহাসড়কের উপর ছিটকে পড়েন রুহুল আমীন। এতে তার ডান পায়ের হাটুর উপর থেকে একাধিক স্থানে ভেঙ্গে যায়, এক পর্যায়ে সেখান থেকে পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। এঘটনায় সারা জীবনের জন্যে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় তাকে, সহায় সম্বল যা ছিল তার সব শেষ করে চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে মানবের জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাকে, তবুও জীবনযুদ্ধে পরাজিত হতে চাননা রুহুল আমীন।
বুকভরা আশা নিয়ে তিনি এসেছিলেন এই প্রতিবেদকের কাছে। অশ্রুভেজা চোঁখ আর কাঁপা গলায় সারাজীবন পরিশ্রম করা সংগ্রামী এই মানুষটি বললেন, ‘ভাইজান ভিক্ষা করে রুটি রুজির কথা চিন্তাও করিনে, একটি পা নেই তাতে কি হয়েছে এখনও পরিশ্রম করে রোজগার করার মত মনোবল আমার আছে।’
সেটা কিভাবে সম্ভব জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘আপনি সাংবাদিক। এই সমাজে এখনও অনেক বিত্তবান ও সহৃদয়বান মানুষ আছে, আপনার একটা লেখার মাধ্যমে কেউ না কেউ আমার অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে আমারে একটা ভ্যান কিনে দেয়ার জন্যে আর্থিক সহযোগিতা করতি পারে। আর একটা মটর ভ্যান (ব্যাটারী চালিত) হলে আমি এক পা দিয়েই ভ্যান চালিয়ে রোজগার করতি পারব। ’
সড়ক দূর্ঘটনায় এক পা হারানো ষাটোর্ধ এই বৃদ্ধকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নং-০১৯২০৫১০১৪০ এ যোগাযোগ করতে পারেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই