তেরখাদা উপজেলায় পাইকারি ও খুচরা দোকান গুলোতে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। প্রায় ১৫-২০ দিন ধরে তেল না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে সংকট মনে করে খোলা সয়াবিন তেল কিনছেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
লোকজন বলছেন, হঠাৎ সয়াবিনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় যদিও দু’একটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছিলো সেখানেও বিপত্তি। বোতলের গায়ে লিখা দামের চেয়ে অধিক দাম ধরছেন ব্যবসায়ীরা । তবে হঠাৎ করে এমন সংকটের জন্য লোকজন ব্যবসায়ীদের বোতলজাত, সয়াবিন তেলের ডিলার এবং কোম্পানিকে দোষারোপ করছেন।
তারা বলছেন, তেলের সঙ্গে একই কোম্পানির চাল-ডাল, সুজি, হলুদ ও মসলা না নিলে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। কোম্পানি গুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের যেসব পণ্যের চাহিদা বাজারে নেই, সেসব পণ্য না রাখলে তেল দিচ্ছেন না বলে দাবি করছেন সয়াবিন তেল বিক্রেতারা। এজন্য তারা দোকানে তেল রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
সরেজমিন উপজেলা সদরের কাটেংগা, জয়সেনা, তেরখাদাসহ বেশ কয়েকটি বাজারের দোকান ঘুরে যায় সয়াবিন তেলের বোতল সংকট। অভিযোগ উঠেছে, অধিক মুনাফা লোভি দোকানিরা অধিক দামে খোলা তেল বিক্রি করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
কাটেংগা বাজারে অবস্থিত মুদি ব্যবসায়ী লাল মাহমুদ জানান, কোম্পানি থেকে বোতলজাত তেল আসছে না, কিন্তু ক্রেতাগণ বোতলজাত তেল কিনতে আসছে কিন্তু আমরা তা দিতে পারছি না।
কাটেংগা বাজারের আজিজুল স্টোরের মালিক আজিজুল ফকির বলেন, নতুন মোড়কের সয়াবিন তেলের বোতল বাজারে না আসা এবং হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন শুধু আমি নই, সকল ব্যবসায়ীরা আগের চেয়ে সয়াবিনের দাম কিছুটা বেশি রাখছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ করে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ১৬৫ টাকা লিটার বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ২০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা ১৯০ থেকে ২০০ টাকা লিটার হিসাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এ দিক থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় দোকানিরা বোতলের গায়ে দেওয়া মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন। তাদের দাবি, আগে কম রেটে কেনা থাকলেও বর্তমানে বাজার মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে আমরা দাম ধরে নিচ্ছি।
সদরের জয়সেনা বাজারে আসা শিক্ষক শাহাজান বলেন, আমি কয়েকটি দোকানে গিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাইনি। যদিও সব সময় বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনে থাকি। কিন্তু বোতলজাত সয়াবিন না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আমি খোলা সয়াবিন তেল কিনেছি। তাও আবার দাম বেশি। এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা রুয়েল মোল্যা বলেন, আমাদের উপজেলার খুচরা ও পাইকারি দোকান গুলোতে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। সংকট মনে করে আমরা খোলা তেল কিনছি। পরে শুনেছি, সংকট নেই। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা শর্ত মেনে তেল বিক্রি করছেন। ওই শর্তে তেল কিনলে খুচরা বিক্রেতাদের লাভ হচ্ছে না। এজন্য তারা কোনও কোম্পানির সয়াবিন দোকানে না তুলে খোলা সয়াবিন বিক্রয় করছেন।
তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহ বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবো। যারা এ সকল কাজের সাথে সম্পৃক্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে