ইতিহাস-ঐতিহ্যের জেলা যশোরকে নানাবিধ সংস্কার পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ রোববার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা করেছেন। ‘রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা ও আমাদের ভাবনা শীর্ষক এ মতবিনিময় সভায় যশোর সংস্কারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক প্রতিনিধি দল।
বৈরি আবহাওয়ায় ঢাকা থেকে প্রতিনিধিরা হলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়াহিদ উজ্জামান, আশরেফা খাতুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবুবকর খান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারহানা ফারিন, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মুইনুল ইসলাম, নয়ন আহমেদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বজিৎ দত্ত, এনইউবি’র তৌহিদ ইসলাম শুভ, ডিআইইউ’র বাবু খান, বদরুন্নেসা কলেজের সুলতানা খাতুন এ জান্নাত, মাহমুদা সুলতানা রিমি।
বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান খান, মারুফ হাসান ও আব্দুল্লাহ্ আল লাইস, রাশেদ খান, জান্নাতুল ফোয়ারা অন্তরা। উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলার সমন্বয়ক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সমাবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত, দেশত্ববোধক গান, স্বরচিত গানের পরে আলোচনা শুরু হয়।
সভায় সমন্বয়কবৃন্দ বলেন, যশোরকে ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি প্রতিরোধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে সারাদেশে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সরকার ৬টি সংস্কারে কমিটি করেছে। পর্যায়ক্রমে সরকার আরও কাজ করবেন। আমরা শিক্ষার্থীরা দেশের সিস্টেম পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি। দেশ সংস্কারের পর আমরা পুনরায় পড়ার টেবিলে ফিরে যাবো। ১৫ বছরের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। এ বিজয়কে সমুন্নত রাখতে হবে। মারধর, খুন, গুম, কন্ঠরোধের সংস্কৃতি পরিবর্তন হয়েছে। আর কোনদিন যাতে এদেশে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার ফিরতে না পারে সে ব্যাপারে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তারা আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষকদের মধ্যকার রাজনীতি দূর করতে এ সরকার কাজ করছে। কোনো দলীয় রাজনীতি নয়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চালু করা হবে। লেখাপড়া শেষে চাকরির পিছনে ছুটে সময় নষ্ট না করে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান জানান সমন্বয়কৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সামনে হয়তো নতুন একটা রাজনৈতিক সংগঠন আসবে। তবে সেটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে নয়। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংবিধান সংশোধন করা হবে। এ সরকার জনগণের সরকার, জনগণের সহযোগিতায় তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছে। গত ৫ আগস্টের পর নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো। আলেমদের হত্যাকান্ড, বিডিআর হত্যাকান্ডসহ বিচার বহির্ভূত সকল হত্যাকান্ডের বিচার করা হবে। দুর্নীতি ও অনিয়মের বিচার করা হবে।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন ও যশোরের সমন্বয়ক সোহানুর রহমান সোহান।
খুলনা গেজেট/কেডি