২০০৮ আর ২০২২, ১৪ বছরের ব্যবধান। আইপিএলের প্রথম আসরে রাজস্থান রয়্যালসকে ফাইনালে তুলেছিলেন শেন ওয়ার্ন, দলকে শিরোপা জিতিয়ে সেবার গড়েছিলেন ইতিহাস। গত বছর অনেকটা হঠাৎ করেই কোটি অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ওয়ার্ন প্রয়াত হয়েছেন, রাজস্থান ১৪ বছর পর ফাইনালে উঠে দলটির হয়ে তাঁর সুখস্মৃতিকে যেন আবার ফিরিয়ে এনেছে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে কোহলি-ডু প্লেসিদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ত্রাজস্থানের ইংলিশ ওপেনার জস বাটলারের ঝড়ো শতকে ১১ বলেই হাতে রেখেই ফাইনালে পৌঁছে যায় রাজস্থান। আইপিএলে অসাধারণ এক মৌসুম কাটানো বাটলার বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৬০ বলে ১০৬ রানের অপরাজিত ইনিংসের মাধ্যমে বিরাট কোহলির দুই রেকর্ড ভাগ বসিয়েছেন। এক আসরে সর্বোচ্চ চার সেঞ্চুরি আর সবমিলিয়ে আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল এতদিন সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের, দুটি রেকর্ডেই এখন তাঁর পাশে ঠাই পাচ্ছে বাটলারের নামও। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছয় সেঞ্চুরির রেকর্ড অবশ্য ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেইলের।
চলতি মৌসুমে বাটলার রীতিমতো উড়ছেন, অপরদিকে অফ ফর্মের অতলে প্রায় হারিয়ে গিয়েছেন কোহলি। দলকে ফাইনালে তোলার ম্যাচে মাত্র ৭ রান করেই প্রসিধ কৃষ্ণার বলে সাজঘরের পথ ধরেছিলেন তিনি। কোহলি দ্রুত ফিরে গেলেও ফাফ ডু প্লেসি (২৭ বলে ২৫), রজত পতিদার (৪২ বলে ৫৮) এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের (১৩ বলে ২৪) ইনিংসগুলোতে ভর করে শুরুটা ভালোই করেছিল বেঙ্গালুরু। ইনিংসের প্রথম ১৩ ওভার থেকে ১০৭ রান তুলে নিয়েছিল তারা। তবে এরপর রাজস্থানের দুর্দান্ত ডেথ বোলিংয়ে বেঙ্গালুরুর আর কোনো ব্যাটার ক্রিজে থিতু হতে না পারায় শেষ ৭ ওভার থেকে দলটি মাত্র ৫০ রান তুলতে সমর্থ হয়।
১৫৭ রানের লক্ষ্য রাজস্থানের দারুণ ফর্মে থাকা ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে যথেষ্ট হবে না, সেটা অনুমান করা যাচ্ছিল। আদতে হয়েছেও তাই। রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থানের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল এবং জস বাটলার মিলে উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৫.১ ওভারেই তারা ৬১ রান তুলে ফেলে। যশস্বী ১৩ বলে ২১ রান ক জশ হ্যাজেলউডের বলে ফিরলেও বাটলারকে সঙ্গ দেন তিনে নামা রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসন।
দলীয় ১১৩ রানে স্যামসন (২১ বলে ২৩) এবং ১৪৮ রানে ইনিংসে হ্যাজেলউডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে দেবদূত পাড়িক্কাল (১২ বলে ৯) প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেও একপ্রান্তে নিজের সহজাত ঝড়ো ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন বাটলার। তাঁর অপরাজিত শতকে চড়েই ১১ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রাজস্থান। তাতেই টানা তৃতীয়বার প্লে-অফেই যাত্রা থামে কোহলির বেঙ্গালুরুর, বাড়ে প্রথম আইপিএল শিরোপার অপেক্ষা।