কয়েকটি পিয়াজ ও কাঁচামরিচ চুরির অভিযোগে অমানুষিক নির্যাতন করে এক নারীর মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে। এসময়ে তাকে গাছের সাথে বেঁধে কয়েক ঘন্টা নির্যতন করা হয়। রোববার রাতে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির দোগাছিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতিত নারী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ব্যাপারে ওই নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ ৫ জনকে আটক করেছে।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে বলা হয়েছে, যশোরের চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া গ্রামের ভ্যান চালক সোহরাব হোসেনের স্ত্রী জহুরা ওরফে কুটি বেগম রোববার রাতে একই গ্রামের মনছুরের বাড়িতে যান নাতনীর জন্য তেল পড়া আনতে। এ সময় মুনছুরের ছেলে আলামিন ও জাহিদুলের ছেলে রিয়াদ হোসেন তাকে চোর বলে আটক করে। আলামিনের দাবি কুটি বেগম তাদের রান্না ঘর থেকে কয়েকটি পিয়াজ ও কাঁচামরিচ চুরি করেছে। এসময় তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
কুটি বেগমের স্বামী সোহরাব হোসেন জানান, আটকের পর তার স্ত্রীকে দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করতে থাকে কয়েকজন। পরে তার মাথার চুল কেটে দেয় তারা। তাকে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করা হলেও উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
আহত কুটি বেগম বলেন, একই গ্রামের কলিম গাজীর ছেলে হারুন, তার স্ত্রী লাবনী বেগম, মুনছুর আলীর ছেলে আলামিন ও তার স্ত্রী কেয়া খাতুন, তার বড় ভাবি সীমা বেগম তাকে গাছে বেধে রেখে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে পাশের বাড়ির জাহিদুলের স্ত্রীর সহযোগিতায় তার মাথার চুল কেটে দেয় অভিযুক্তরা।
কুটি বেগমের ভাইপো দুলাল মিয়া বলেন, সামান্য পিয়াজ ও কাঁচামরিচ চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে অভিযুক্তরা আমার ফুফুকে যেভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা মারপিট ও নির্যাতন করেছে, তা অমানবিক। তিনি আরো জানান, অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সোমবার বিকালে তার ফুফুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একজন মানুষ অপরাধ করলে তাকে পুলিশে সোর্পদ করতে হবে। কিন্ত চুরির অভিযোগে একজন মহিলার সাথে যা করা হয়েছে তা বর্বরোচিত ঘটনা।
এ ব্যাপারে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সেলিম হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ মামলায় তাদেরকে আদালতে চালান দেয়া হবে। তিনি বলেন, মহিলা চোর হলে তাকে আটকে রেখে আমাদের খবর দিতে পারতেন। এভাবে অমানুষিক নির্যাতন করা ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন বলেন, চুরির অপবাদে একজন মানুষকে এভাবে মারপিট ও নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থী। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।