যশোরের চৌগাছায় পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইয়াছির আরাফাত। ইয়াছির আরাফাত এলএলবি পাশ করে দুই বছর ঢাকায় আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তার এই পেশা ভালো লাগেনি। তাই পেশা পরিবর্তন করে নিজ জন্মভূমিতে ফিরে এসে তৈরি করেছেন বালু সিমেন্ট দিয়ে ইট তৈরির কারখানা।
উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে ইয়াছির আরাফাত। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে তার সুনাম সর্বত্রই। ঢাকায় এলএলবি পাশ করে ওই পেশায় নিজেকে নিযুক্ত করেন। কিন্তু পেশার সাথে নিজেকে সেভাবে যুক্ত করতে পারেননি। ছোটবেলা হতেই তিনি নিজে কিছু করবে এই ইচ্ছাশক্তি তাড়া করে বেড়াতো। তাই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও অন্য কোনো চাকরির সন্ধান না করে ফিরে আসেন আপন ঠিকানায়। নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেছেন পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা। নামকরণ করা হয়েছে এস.আর কংক্রিট ব্লক অ্যান্ড টাইলস ইন্ডাস্ট্রিজ। এ অঞ্চলে বালি সিমেন্টের ইটের চাহিদা খুব একটা না থাকায় বেচাকেনা সন্তোষজনক না হলেও আশাবাদী উদ্যোক্তা।
ইয়াছির আরাফাত বলেন, শিক্ষা জীবনে সর্বোচ্চ ডিগ্রি গ্রহণ করেছি, দুই বছর ওকালতি পেশায় যুক্ত থাকার পর নিজেকে পেশায় খাপ খাওয়াতে পারিনি, তাই পেশা ছেড়ে অন্য কোনো চাকরির সন্ধান না করেই নিজ গ্রামে ফিরে আসি এবং কারখানা তৈরির মনস্থির করি। চলতি বছরের প্রথম দিকে পরীক্ষামুলক কাজ শুরু করি।
এরপর জুলাই মাস হতে কারখানায় পুরোদমে ইট বের হতে শুরু করে। বর্তমানে ১০জন শ্রমিক এখনে কর্মরত আছেন। আমি আশাবাদী অচিরেই ইটের চাহিদা বাড়বে। ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক দিনে ২০ হাজার ইট তৈরি করতে পারেন বলে তিনি জানান। ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে এই কারখানায় নিজের এলাকার সন্তানরা সারাদিন কাজ করছে এবং সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে পরিবার নিয়ে এক সাথে থাকতে পারছেন।
তিনি বলেন,সুদূর চীন থেকে অটোব্লক মেশিন কেনা হয়েছে। মূলত এই মেশিন ইট বানিয়ে দিচ্ছে। ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হয় সিমেন্ট, বালি, পাথরকুচি ও ডাস্ট। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এই ইট অত্যন্ত মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী। এক একটি ইট তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১০ টাকা, আর তিনি বিক্রি করছেন ১১ টাকায়। তার কাজে সহযোগিতা করছেন তার বন্ধু রাকিব উদ্দিন, কামরুল ইসলাম, মো. মিঠু ও ইফতেখার আলম। পাঁচ বন্ধুর এই কর্মযঞ্জ এলাকায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা উজ্জল বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা ইয়াছির আরাফাত অন্য শিক্ষিত যুবকদের কাছে দৃষ্টান্ত। তিনি যে কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাকে সাধুবাদ জানাই, পাশাপাশি আমি মনে করি সরকার এসব উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়ালে তারা নিজেদের মেধাকে আরও বিকশিত করতে পারবেন।
খুলনা গেজেট/ টিএ