খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৪
  আবার আমিরাতে আরও ৭৫ বাংলাদেশিকে ক্ষমা ঘোষণা করল দেশটির সরকার

দেশী বন্ধুর হাতে কুয়েতে খুন যশোরের আনোয়ার, খুনীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিষ্ঠিত হবার আশায় কুয়েতে গিয়েছিলেন যশোর সদর উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন। চাকরি করছিলেন আবু হালিফা এলাকার আমনকো কোম্পানিতে। চাকরির পাশাপাশি করছিলেন ব্যবসাও। কিন্তু সেই ব্যবসা তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। কুয়েতেই সহকর্মীর হাতে খুন হন আনোয়ার। এরপর শনিবার নিজ বাড়িতে লাশ হয়ে ফেরেন তিনি। আনোয়ার হোসেনের অকাল মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনসহ স্থানীয়রা।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, আনোয়ার হোসেন অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছেন। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসারের বোঝা টানতে না পেরে তিনি আত্মীয়দের দারস্থ হন। পরে অনেক কষ্টে সবার সহযোগিতা নিয়ে আট বছর আগে পাড়ি দেন কুয়েতে। সেখানে চাকরির পাশাপাশি শুরু করেন গ্যাসের ব্যবসা। ওই ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সহকর্মী মানিকগঞ্জের রুবেলকে। কিন্তু বিশ^াস ঘাতক রুবেল ব্যবসার টাকা আত্মসাৎ করেন। গত ২৬ অক্টোবর ওই টাকা ফেরত চাওয়ায় তাদের মাঝে বিতর্ক বাধে। এক পর্যায়ে তাদের বাসভবনের ১০ তলায় কৌশলে আনোয়ারকে নিয়ে যায় রুবেল। সাথে আরও কয়েকজন আফ্রিকান সেখানে যোগ হন। এরপর তারা রুবেলকে ধরে বেধে হাত ও পায়ের রগ কাটেন। পরে গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে মৃতদেহ ছাদে রেখে পালিয়ে যায় সবাই। তিনদিন পর বিষয়টি নজরে আসে কুয়েত পুলিশের। পুলিশ ঘাতক রুবেলসহ পাঁচজনকে আটক করে। পরে পুলিশ ঘাতক রুবেলকে নিয়ে যায় সেই ১০ তলা ভবনের ছাদে। কিভাবে আনোয়ারকে হত্যা করা হয়েছিলো তা দেখানোর এক ফাঁকে ঘাতক রুবেল ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। শেষমেষ রুবেলেরও ঠাঁই হয় কুয়েতের হাসপাতালের মর্গে আনোয়ারের পাশে। বিদেশে সব কর্মকান্ড শেষে একমাস পর দু’জনেই একই বিমানে পাশাপাশি শুয়ে ফেরেন বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় ঢাকার হযরত শাহাজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে । শুক্রবার ভোরে যশোরের চাঁদপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে পৌছায় আনোয়ারের মরদেহ। এসময় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্বজনেরা আরও জানায়, আনোয়ার গত আটমাস আগে দেশে এসেছিলেন। এসময়ে মেয়ের বিয়ে দিয়ে তিনি কুয়েতের কর্মস্থলে ফিরে যান। এরপর সর্বশেষ শুক্রবার ভোরে চিরদিনের মত বাড়ি ফিরে এলেন।

গ্রামবাসী জানায়, আনোয়ার ছিলেন পরোপকারী। বিদেশে থেকে এলাকার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন তিনি। আনোয়ারের মরদেহ নিজ গ্রামের আনার পর শেষবারের মত দেখতে বাড়িতে যান হাজারো মানুষ। শুক্রবার দুপুরে নিজ বাড়ির সামনেই তার নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!