তেরখাদা উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত এক সময়কার খরস্রোতা চিত্রা এখন আবর্জনার ভাগাড়। উপজেলা সদরের কাটেংগা, জয়সেনা ও তেরখাদা বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এ নদীতে। এতে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে দুষণ, ছড়িয়ে পড়ছে রোগ-বালাই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের এ তিনটি বাজার চিত্রা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় ময়লা-আবর্জনা সব এখানেই ফেলা হয়। এই বাজারগুলোর মাংশ পট্টি, মুরগির দোকান ও কাচাঁ বাজারের যাবতীয় বর্জ্য প্রতিদিন এই নদী ও নদীর পাড়ে ফেলা হয়। জবাই করা গরু-ছাগল, মুরগির রক্ত,বিষ্ঠা, পঁচা মাছ ও তরকারির আবর্জনা ফেলা হয় যত্রতত্র। এতে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে দূর্গন্ধ। ডাস্টবিন বা ময়লা ফেলার ভাগার না থাকায় যত্রতত্র এসব ফেলছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও বাজার ব্যবসায়ীরা।
শুধু তাই নয়, বাজারের আশপাশে অবস্থিত গ্রামের বাসা-বাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করে তা নদীর ও নদী পাড়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধের শিকার হচ্ছেন এলাকার পথচারী, আশপাশে বসবাসকারী লোকজন সহ বাজারের ব্যবসায়ীরা।
বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা শেখ, সবুজ রায়, রুবেল শেখ সহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য সুনির্দিষ্ট কোন জায়গা না থাকার কারণে নদীতেই ফেলা হয়। এ সব ময়লা-আবর্জনা ও দুষিত পানির দুর্গন্ধের ফলে প্রতিদিন ব্যবসায়ীরা যেমন কষ্ট করে ব্যবসা করে তেমনি ক্রেতারাও দুর্গন্ধের শিকার হন। এছাড়াও নদীর দু পাড়ে বসবাসকারী লোকজন এই দূষিত পানি দিয়ে, গোসল, পোশাক ধৌত করা, থালা বাসন পরিস্কার সহ সাংসারিক নানাবিধ কাজ করে থাকে। এই দুর্গন্ধযুক্ত দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে তারা পানিবাহিত রোগ সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকার সচেতন মহল। দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেছনে, চিত্রা ব্রীজের গোড়ায় ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে গেছে। কাটেংগা বাজার মসজিদের পেছনে কাঠের ব্রিজ পার হতে নাকে কাপড় দিয়ে যেতে হয়।
কাটেংগা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মোল্যা হুমায়ুন কবির বলেন, উপজেলা সদরের বাজারগুলোতে নির্দিষ্ট কোন যায়গা না থাকায় নদীর মধ্যে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় বাধ্য হয়ে চিত্রা নদীতে এসব ফেলা হয়। তাই নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য বাজার কমিটিকে নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারন করার দায়িত্ব দেওয়া হবে। তারপরও যদি বর্জ্য নদীতে ফেলা হয় তাহলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ