যশোরের চৌগাছায় ড্রাগন ফলে হরমোন স্প্রে করে দ্রুত বড় করার অভিযোগ উঠেছে। কৃত্রিমভাবে বড় করা ড্রাগন ফল পরীক্ষার দাবি করেছেন ক্রেতারা।
চৌগাছাসহ পার্শ্ববর্তী মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার কৃষক এমনকি বিদেশ ফেরত ব্যক্তি ও বেকার যুবকদের কাছে লাভজনক ফসলের নাম ড্রাগন। প্রায় এক দশক আগে ফলটি চৌগাছাতে চাষ শুরু হয়। সময়ের সাথে বাড়তে থাকে এর ব্যাপকতা। রং আর স্বাদে অপরুপ এক সৌন্দর্য বহন করায় তা সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
দ্রুত বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে কৃষক টনিক ও প্লানোফিক্র নামে দুটি হরমোন পানির সাথে মিশিয়ে কৃষক এ ফলে স্প্রে করছেন। পাশাপাশি অপরিপক্ক সবুজ রঙের ড্রাগন দ্রুত লাল রঙে পরিণত করতেও প্রয়োগ করা হচ্ছে ওষুধ। স্প্রে করা হরমোন স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপযোগী তা নিয়ে ক্রেতা সাধারষের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চৌগাছা উপজেলাতে ১৩৫ হেক্টরের বেশি জমিতে ড্রাগন চাষ করা হয়েছে। উপজেলার পাতিবিলা, হাকিমপুর ও নারায়ণপুর ইউনিয়নে ড্রাগনের চাষ সব থেকে বেশি। এক একজন কৃষক দুই বিঘা থেকে শুরু করে ২৫ বিঘা পর্যন্ত ড্রাগনের চাষ করেছেন। ড্রাগন ফল ধীরে ধীরে যখন সাধারণ মানুষের কাছে পছন্দের একটি ফলে রুপ নিতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ে কতিপয় কৃষক গাছে ফলটি থাকা অবস্থায় দ্রুত বড় করার জন্য হরমোন স্প্রে করছেন।
প্রথম দিকে হরমোনের ব্যবহার কম দেখা গেলেও দিন যত যাচ্ছে এর ব্যবহার ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নারায়ণপুর গ্রামের চাষি আবু সাঈদ জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে ড্রাগনের চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। একবার ড্রাগন লাগানোর পর কমপক্ষে ১০ বছর তা ফল দিয়ে থাকে। ড্রাগনে হরমোন স্প্রে করা হচ্ছে বলে শুনেছি, তবে এখনও আমি এটি ব্যবহার করিনি।
চাষিরা জানান, হরমোন পানির সাথে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার কয়েক দিন পরেই স্প্রে করা হচ্ছে। স্প্রে করার ফলে এক একটি ফল ৪০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত বড় হচ্ছে। হরমোন মেশানো দুটি ড্রাগন এক কেজির বেশি হচ্ছে, পক্ষান্তরে স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা ফল ৫ থেকে ৭টিতে হচ্ছে এক কেজি। অধিক লাভ আর দ্রুত বিক্রির আশায় চাষিরা এটি করছেন। কৃষকরা জানান, টনিক ও প্লানোফিক্র নামক হরমোন ভারতের তৈরি, তবে সম্প্রতি এটি দেশে নকল হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ক্রেতা সেলিম রেজা বলেন, ড্রাগন একটি পুষ্টিকর ফল। বাড়ির ছোট সদস্যদের কাছে ফলটি খুবই জনপ্রিয়। কৃত্রিম উপায়ে ফলটি বড় করা হচ্ছে, এতে স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হয় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তাই ফলটি দ্রুত পরীক্ষা নীরিক্ষা করা জরুরি।
খুলনা গেজেট//এসজেড