খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

চৌগাছা এলাকায় কপোতাক্ষ খনন আবারও শুরু, স্থানীয়দের নানা প্রশ্ন

চৌগাছা প্রতিনিধি

যশোরের চৌগাছার উপর দিয়ে বয়ে চলা কবি মাইকেল মধুসুধন দত্তের কপোতাক্ষ নদ খনন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে যত্রতত্র ভাবে চলছে খনন কাজ। যে ভাবে খনন হচ্ছে তাতে এক সময়ের খরস্রোতা নদ যেন ছোট খালে পরিনত হচ্ছে। নদের পাড়ে বহু স্থাপনা রক্ষা করে চলছে কার্যক্রম। এ ভাবে নদ খনন হলে এটি সরু খালে পরিনত হবে বলে মনে করছেন অনেকে। সরকারের মহৎ এই উদ্যোগ যেন পানিতে ভেসে না যায় তার জন্য খননকার্য পরিদর্শনে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কপোতাক্ষ নদ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। চৌগাছার হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর ব্রীজ সংলগ্ন হতে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ৭৯ কিলোমিটার খনন করা হবে। যার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। শুরুর বছরে বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ফের্রুয়ারী মাসে পুনরায় কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গুলো। ওই বছরে বেশ কিছু কাজ করার পর আবারও বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয় কাজ। চলতি অর্থ বছরে নদের পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও শুরু হয়েছে খনন কাজ।

কিন্তু এই খনন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে নদের তল দেশের তরল কাদা (বোদ) এসকােমিটারের মাধ্যমে তুলে তা পাড়ে স্তুপ করা হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতে এই কাদা মাটি পুনরায় নদে পড়ে আবারও ভরাট হচ্ছে। নদে থাকা পানি আর পট কচুড়ির মধ্য হতে তোলা হচ্ছে কাদা। যে পরিমাপে খনন হওয়ার কথা তা অদৌ হচ্ছে কিনা তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে শংসয়।

গত অর্থ বছরে যেখানে যতটুকু খনন হয়েছে সেখানে এবছর আজও কাজ শুরু হয়নি। এ ছাড়া নদের পাড়ে অবৈধ স্থাপনা রেখে খনন কাজ চলছে বলে অভিযোগ। নদ খনের আগে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ছিলো অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে নদের জমি উদ্ধার করে খনন কাজ সম্পন্ন হবে।

কিন্তু খননকাজ শুরু হলে এর বিপরীত দৃশ্য দেখেন এ জনপদের বাসিন্দার। গতকাল চৌগাছা বাজারের পাশে নদ খননের দৃশ্য দেখতে যেয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের বেশ কিছু সত্যতা মেলে। নতুন নির্মিত চৌগাছা সেতুর উত্তর পাশে দুইটি এসকােমিটার দিয়ে চলছে খনন কাজ। ওই স্থানে নদের পূর্ব পাড়ে রয়েছে বেশ কিছু বসতি ঘর আর পশ্চিম পাশে আছে জৈনক এক ব্যক্তির বাড়ি। তিনি নদের জমিতে টিনসেটের ঘর তৈরী করে নদের জমি দখলে রাখার চেষ্টা করেছেন। টিনসেটের ঘরের দুই পাশেই নদ খননের কাদামাটি জমা করা হলেও অজ্ঞত কারনে ঘরটি রয়েছে অক্ষত।

স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, নদের জমি যারা দখলে রেখেছেন তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সরকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত। ওই সব ব্যক্তি নানা ভাবে দেন দরবার করে তাদের স্থাপনা রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই ভাবে যদি নদ খনন করে কাজ সম্পন্ন করা হয় তাহলে সরকারের মহতি এই উদ্যোগ কোন ভাবেইে সফল হবেনা। লাভবান হবে ঠিকাদার আর নদ পাড়ে যাদের জমি আছে ওই ব্যক্তিবর্গ।

নদের কাদা মাটি তুলে যে স্থানে ফেলা হচ্ছে এক সময় ওই স্থানের উপরে যাদের জমি আছে তারাই সমুদয় জায়গা দখলে নিবে। বর্তমান খনন কাজ দেখে পথচারীসহ অনেকেই বলছেন নদ খননের নামে যেন তামাশা করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে কপোতাক্ষ খননকাজ সরেজমিন পরিদর্শন পুর্বক সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!