যশোরের চৌগাছায় কঠোর বিধি নিষেধের ১০ম দিনে ১৭ জনের নমুনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২জন। করোনা সংক্রমণ রোধে প্রশাসন সহ জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন। চলছে কঠোর বিধিনিষেধ কিন্তু কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না সংক্রমণ। চৌগাছাতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। আর চলতি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত উপজেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১২৪ জন।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছেন, গত ২৪ জুন ১৭ জনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য যশোরে পাঠানো হয়। ২৬ জুন ১৭ জনের মধ্যে ১২ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।
নতুন আক্রান্তরা হলেন, পৌরসভার ইছাপুর মহল্লার রোজীনা বেগম (৩৮), পাঁচনামনা মহল্লার আঃ রশিদ (৪৮), উপজেলার গরীবপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান (৬৫), উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের জহুরা বেগম (৫৭), ফুলসারা গ্রামের রাহাজ্জেল মোড়ল (৫৫), পুড়াপাড়ার সামাউল ইসলাম (৩৮), বর্ণী গ্রামের আক্তারুজ্জামান (৩৯), ধুলিয়ানী গ্রামের আব্দুল হুসাইন (৫০), সলুয়া গ্রামের আব্দুল মজিদ (৭৫), পেটভরা গ্রামের রবিউল ইসলাম (৭০), উপজেলা কৃষি অফিসার সমরেন বিশ্বাস (৩৭) ও ঝিকরগাছার শিমুলিয়ার আরিফুর ইসলাম (৩০)।
এদিকে চলতি মাসের ৩ তারিখ হতে ২৪ তারিখ পর্যন্ত চৌগাছায় মোট ১২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মাসের শুরুতে শনাক্তের হার কম হলেও দিন যত বাড়ছে ততই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। চলতি মাসের ৩ জুন ২ জনের শরীরে শনাক্ত হয় করোনা পজেটিভ। এরপর ৫ জুন আক্রন্ত হয় ১ জন। অনরুপ ভাবে ৬ তারিখে ৩, সাত তারিখে ১, আট তারিখে ৬, নয় তারিখে ৫, ১০ তারিখে ৫, ১১ তারিখে ১, ১৩ জুন ৮, ১৪ জুন ৫, ১৫ জুন ৮, ১৬ জুন ৯, সতের তারিখ ৮, ১৮ তারিখ ১০, ২০ তারিখে ৯, ২১ তারিখে ৮, তেইশ ও চব্বিশ তারিখে ৩৩ এবং সর্বশেষ ২৫ জুন ১২ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফুন্নাহার বলেন, চৌগাছাতে নমুনা দেয়ার সংখ্যা কম তাই আক্রান্তও কম বলে মনে হচ্ছে, বাস্তবচিত্র পুরোটাই উল্টো। শহর কি গ্রাম সর্বত্রই মানুষ করোনা উপসর্গ বহন করছেন অথচ পরীক্ষা করাতে আসছেন না। যখন আর কোন উপায় থাকছে না তখনই কেবল হাসপাতালে ছুটছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরের বাইরে না আসার জন্য তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
কঠোর বিধি নিষেধের ১০ম দিন পার করছেন চৌগাছা পৌরবাসী। বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা ভোর থেকেই কঠোর অবস্থানে। এ দিনও খুলতে দেয়া হয়নি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, লোকাল সড়কে সীমিত পরিসরে চলতে দেখা গেছে ভ্যান আর ইজিবাইক।
উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার সলুয়া, হাকিমপুর, পাতিবিলিা, পুড়াপাড়া, মাশিলা, পাশাপোল সহ মেইন বাজার গুলোতেও প্রশাসনের ব্যাপক নজরদারী লক্ষ্য করা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এনামুল হক বলেন, ‘সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার কোন বিকল্প নেই। আমরা পৌর ও উপজেলাবাসীকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি নিজে সুস্থ্য থাকলে পরিবার ও সমাজ তথা দেশ ভাল থাকবে, তাই সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি নিষেধের সময়ে কেউ ঘর থেকে বের না হয়। যারাই আইনকে অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
খুলনা গেজেট/ এস আই