যশোরের চৌগাছা থেকে ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যাপসের মাধ্যমে আইডি খুলে এবং সুপার সপ ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট খুলে উপজেলার অর্ধশত গ্রাহকের প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব চৌগাছায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চৌগাছা বাজারের ফটোকপি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ রাজু।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যার প্রধান কার্যালয় ঢাকার মালিবাগ রেলগেট আয়েশা কমপ্লেক্স-৩য় তলা। দেশে ৬৪ জেলায় তাদের সুপার সপ, রেস্টুরেন্ট, কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠান, জুতার কারখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে সেখান থেকে আমাদের লভ্যাংশ দেয়ার নাম করে আমাদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। তারা চৌগাছা শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডে পুরাতন সোনালী ব্যাংক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট নামে দুটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ চৌগাছা উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষ ও চৌগাছার ডিভাইন কফি সপে ইউনিক মার্ট সুপার সপের বিভিন্ন কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের টাকা লগ্নিতে উদ্বুদ্ধ করে। তারা মূলত: চৌগাছার স্থানীয় কিছু অসাধু ও বাটপার মানুষের দ্বারা তাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করতো। তাদের সমন্বয়ে ইউনিক ওয়ার্ল্ডের গ্রাহকদের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা তুলেছে। আমরা চৌগাছার মাড়ুয়া গ্রামের রাজু আহাম্মেদ সোহাগ (ওই কোম্পানির ডেপুটি ডিরেক্টর), আন্দারকোটা গ্রামের আক্তারুল ইসলাম (সুপার সপ তত্বাবধায়ক ও উপজেলা কর্মকর্তা), শহরের সিদ্দিক টেইলার্সের সিদ্দিকের ছেলে শাহারিয়া নাফিস (মার্কেটিং কর্মকর্তা), পৌরসভার কারিগরপাড়ার বাসিন্দা ও চৌগাছা বাজারের ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া (মার্কেটিং কর্মকর্তা), তার ছেলে আল মাসুদ (মার্কেটিং কর্মকর্তা), মিন্টুর মেয়ে জুলেখা জামান (মার্কেটিং কর্মকর্তা) এবং মিন্টুর মেয়ের জামাই ও বরিশালের কুয়াকাটার বাসিন্দা মনিরুজ্জামানদের (কো-অর্ডিনেটর) বিশ্বাস করেই সবাই কোম্পানীর সাথে যুক্ত হই। তারাই আমাদের টাকা মেরে দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, কোম্পানীর চৌগাছার ইউনিক মার্ট (সুপার সপ) ও ইউনিক রেস্টুরেন্টের মাধ্যমে চৌগাছা পৌরসভার বাকপাড়া গ্রামের হাসিবুল হাসান শান্তর ১০ লাখ ৫০ হাজার, নাজমুল কবীরের ৭ লাখ ৫০ হাজার, রেহেনা পারভীনের ৩ লাখ, রুমা আক্তারের ২ লাখ, জাহিদ হাসানের ৪ লাখ, উপজেলার বাড়িয়ালী গ্রামের আব্দুর রশিদ রাজুর ৪ লাখ, ফুলসারা গ্রামের ফয়সাল আহমেদের ২ লাখ ৬০ হাজার, রহমাত আলী সেতুর ১৬ লাখ, মুনজুরুল সোহাগের ১২ লাখ ১৫ হাজার, মারুফ হোসেনের ১ লাখ ৩২ হাজার, ইকরামুলের ২ লাখ, রেজওয়ানের ১ লাখ ৩৫ হাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের গ্রাহকের প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। এসব টাকার বিপরীতে তাদের কারও কাছে বিভিন্ন অংকের টাকার চেক দিয়েছিলো কোম্পানীর কর্মকর্তারা। সেসব হিসাবে টাকা না থাকায় ইতোমধ্যেই চেক ডিজ-অনার হয়েছে। এরই মধ্যে উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও তাদের স্থায়ী ঠিকানায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, তাদের এই কার্যক্রম অনলাইন ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড অ্যাপস এর মাধ্যমে ১২শ’ টাকা প্রতিটি আইডি খুলে বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে ১০ টাকা করে ইউনিক ওয়ার্ল্ডের অ্যাপসের আইডিতে জমা হতো। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রহমত আলী সেতু, ফয়সাল আহমেদ, হাসিবুল হাসান শান্ত, নাজমুল কবীর, জিাহদ হোসেন, আমীর হামজা, রেজওয়ান ইসালমসহ ভুক্তভোগীরা।
খুলনা গেজেট/ টি আই