যশোরের চৌগাছার ৬নং জগদীশপুর ইউপির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তবিবর রহমান খান নিজের ভাতিজা ঘোড়া প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থনে নিজেকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। ঘটনাটিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী ‘ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
রবিবার বেলা ১২টার দিকে চৌগাছার সাংবাদিকদের একটি সংগঠনের কার্যালয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী ভাতিজা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আজাদ রহমান খানকে পাশে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন ‘আমি র্দীর্ঘদিন ধরে জগদীশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এবারও আমার প্রতি আস্থা রেখে দলীয় সভানেত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক প্রদান করেন। তবে শারিরিক অসুস্থতার কারনে আমি আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে নিজের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। তিনি আরও বলেন আমার শারিরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচনের আগেই আমাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে হবে।’ তবে প্রার্থীতা থেকে সরিয়ে নিলেও তিনি রাজনীতিতে থাকছেন বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি শারিরিক অসুস্থতার কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে পারিবারের সম্প্রীতি বজায় রাখতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলি জানিয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় নৌকার একটি পথসভা থেকে কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী ও তবিবর খানের আপন ভাতিজা আজাদ রহমান খানের অফিসে হামলা চালায়। এসময় আজাদ রহমান খান ও তাঁর দুই সমর্থক গুরুতর জখম হন। রবিবার সংবাদ সম্মেলনেও তিনি মাথায় ব্যন্ডেজ নিয়ে চাচার পাশে বসে ছিলেন। তবিবর রহমান খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক। তাঁর স্ত্রী সন্তানরা সেখানেই থাকেন।
এরআগে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতে নৌকা সমর্থকদের হামলায় বিদ্রোহী প্রার্থী তাঁর দুই সমর্থকসহ আহত হয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরে তিনি এ বিষয়ে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও মামলা রেকর্ড হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি আত্মহত্যারও হুমকি দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে পরিবারের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর পারিবারিক সিদ্ধান্তে নৌকার প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তবিবর রহমান খান বলেন, নৌকার প্রার্থী হিসেবে কাউকে সমর্থন দিতে পারিনা। শারিরিক কারনে নিজেকে নিবাচনী কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নিয়েছি। পাশে বিদ্রোহী প্রার্থী ভাতিজাকে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবারের ভুল বোঝাবুঝি থেকে ইউনিয়নের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা যাচ্ছিলো।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলসারা ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি এটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মনে করছি। নৌকার প্রার্থী সেখানে দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান। সেখানে বারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় লাভ করেছে। ওখানে আওয়ামী লীগ এত দৈন্যদশায় পড়েনি যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রত্যাহার হতে হবে। কয়েকদিন আগেই তাঁকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। নৌকা জনপ্রিয় প্রতীক, এখানে আত্মীয়তা করার কোন সুযোগ নেই। আমরা তাঁকে কারণ দর্শনো নোটিশ দেব। কিভাবে তিনি ভ্রাতুষ্পুত্রকে সমর্থন দেন। এটা আমরা কেন্দ্রে লিখিতভাবে জানাবো। আশা করি দল বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাঁকে দল থেকে বহিস্কার করবে। বিষয়টিতে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
খুলনা গেজেট/ এস আই