যশোরের চৌগাছায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য প্রার্থী হয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। সোমবার (১৭এপ্রিল) এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানেও জীবনের নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে প্রতিনিধির মাধ্যমে অভিযোগপত্রগুলি জমা দিয়েছেন তিনি। প্রায় একই অভিযোগ তিনি প্রতিনিধি মারফত চৌগাছা থানার ওসির কাছে পাঠিয়ে সেটি জিডি হিসেবে গ্রহণ করার আবেদন করেছেন।
হাফিজুর রহমান উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের মাশিলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আগামী ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য মাশিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের লক্ষে অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আগামী ২৪ এপ্রিল মাশিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য পদে আমিসহ ১৮ জন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিই। ৯এপ্রিল নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। এরপর আমরা প্রচারণা শুরু করি। ১১ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন ছিলো। কিন্তু ১০ এপ্রিল দিবাগত রাত একটা ত্রিশ মিনিটের দিকে বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান বহিরাগত ২০/৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার নিজ প্যানেলের ৫ জন সদস্য ছাড়া অন্য সকল প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীদের বাড়িতে অতর্কিতভাবে প্রবেশ করে, প্রার্থীদের ঘুম থেকে তুলে ক্ষেত্র বিশেষ মারধর করে অস্ত্রের মুখে জোর করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তারা সকলের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারপত্র পরদিন ১১ই এপ্রিল কোন প্রার্থী ছাড়াই নিজেরা প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা দেন এবং প্রধান শিক্ষক তা গ্রহণ করেন। যা বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (শাখা-১২) এর ০৮/০৬/২০০৯ তারিখের প্রজ্ঞাপনের প্রবিধান ২২ এর সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
তিনি আরও অভিযোগ করেন ‘আমি বিশেষ কাজে ঢাকায় অবস্থান করায় আমার থেকে স্বাক্ষর নিতে পারেনি। তবে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকিধামকী দেয়া হচ্ছে যেন আমি এলাকায় না আসি। বিষয়টি ১০ এপ্রিল রাতেই আমি আপনিসহ (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে আন-অফিশিয়ালী হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করে অবহিত করি। বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতির ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীবাহিনী আমি ও আমাদের অন্যান্য ১৩ জন প্রার্থীকে প্রতিনিয়ত হুমকির মধ্যে রাখছে, যেন আমরা প্রশাসনের দারস্থ না হতে পারি। এ বিষয়ে আমি চৌগাছা থানায় জিডির আবেদন করেছি। প্রাণ নাশের হুমকি থাকায় আমার এই আবেদন আপনার দপ্তরে প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রেরণ করছি।’ বলেও তিনি লিখেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টির পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও চৌগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন, প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান নামে একজন লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি জানিয়েছেন যিনি অভিযোগ করেছেন তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার হয়নি।