যশোরের চৌগাছায় ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আশা হত্যার ২২ বছর পর সেই আসামিদের হাতে খুন হলেন তার আপন ভাই আনিসুর রহমান। মঙ্গলবার রাতে তাকে কুপিয়ে জখমের পর বুধবার ভোরে আনিসুরের মৃত্যু হয়।
নিহত আনিসুর রহমান (৫৫) উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে ও নিহত ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আশা’র সেজো ভাই। হামলায় আনিসুরের ফুফাতো ভাই আব্দুস সালামও আহত হন। হামলাকারীরা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত এবং চেয়ারম্যান আশা হত্যা মামলার আসামি।
নিহত আনিসুরের ছোট ভাই আশিকুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আনিসুর রহমান নিজ বাড়ির সন্নিকটে জগন্নাথপুর উত্তরপাড়া মোড়ে একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এরপর তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে দোকান থেকে বের হন। এ সময় হঠাৎ সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা চালিয়ে রামদা, চাপট ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আশা চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি বিএনপি সমর্থক লেন্টু, অহিদুল ও হাদির নেতৃত্বে আমিন, ইকলাসসহ ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী এই হামলা চালায়। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান ফুফাতো ভাই আব্দুস সালাম। সন্ত্রাসীরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আনিসুর রহমানকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোর ৪টার দিকে আনিসুর রহমানের মৃত্যু হয়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, নিহতের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
চৌগাছার থানায় ওসি’র দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক মেহেদি হাসান জানান, হামলার শিকার আনিসুর রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে মারা গেছেন। পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চৌগাছার সিংহঝুলীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনৈতিক বিরোধ দীর্ঘদিনের। ২০০২ সালের ২৪ জুলাই সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফ হোসেন আশা। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত লেন্টু ও অহিদুল। ২২ বছর পর তাদের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী মঙ্গলবার রাতে আনিসুরের উপর হামলা চালায়।
খুলনা গেজেট/এনএম