খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জন্মভূমির সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালু হত্যায় চরমপন্থী দল জনযুদ্ধ জড়িত ছিল। জন্মভূমি, সান্ধ্য দৈনিক রাজপথের দাবি পত্রিকায় বক্তব্য এবং বিভিন্ন সভা সমাবেশে চরমপন্থী দলের বিরুদ্ধে তিনি বক্তৃতা করতেন। আর এ কারনেই সে সময়কার সন্ত্রাসী দল জনযুদ্ধের খুব সহজেই টার্গেট হন তিনি।
সোমবার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারি অপরাধ দমন ট্রাইবুন্যালের জজ সাইফুজ্জামান হিরো হুমায়ুন কবির বালু হত্যার বিস্ফোরক অংশের রায়ে একথা উল্লেখ করেন। রায়ে বলা হয়, সেসময় খুলনা নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মানিক চন্দ্র সাহা, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি খুলনা জেলা শাখার সভাপতি রতন সেন, দৈনিক জনকণ্ঠের যশোর আঞ্চলিক প্রধান শামসুর রহমান কেবল, দৈনিক রানারের সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল, ৭০ সালের প্রদেশিক পরিষদের সদস্য সাতক্ষীরার পত্রদুত সম্পাদক স ম আলাউদ্দিন সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিহত হন। তদন্তকারি কর্মকর্তার রিপোর্ট ও রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয় বোমা বিষ্ফোরণের দ্বারা জন্মভূমি পত্রিকা অফিসের সামনে সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালু নিহত হন। ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করলে সহজে অনুমান করা যায়, যে কোন চাঞ্চল্যকর হত্যা বা বিষ্ফোরণ মামলায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী থাকবে না এবং থাকলেও সাক্ষ্য দেবে না এটাই স্বাভাবিক।
৫৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। ২০০৪ সালের ২৬ জুন দৈনিক জন্মভূমির সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালু নিহত হন। ঘটনার একদিন পর খুলনা থানার সাব ইন্সপেক্টর মারুফ হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ৬ জন বেকসুর খালাস পায়। পরবর্তিতে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাব ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বিস্ফোরক অংশের অধিক তদন্ত করে চার্জশীট দেন। সোমবার দেওয়া রায়ে আদালত জাহিদ গাজী, নজরুল ইসলাম ওরফে খোড়া নজরুল, স্বাধীন ওরফে ইকবাল, সাদিকুর রহমান রিমন, মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর (পলাতক) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন।
হত্যা মামলার অংশের অন্যতম আসামী জনযুদ্ধের প্রধান আব্দুর রশিদ, মালিথা তপন ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম