খুলনা থেকে রাজশাহী গামী ট্রেনের টিকিট যেন সোনার হরিণ। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও টিকিট পাচ্ছেনা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ যাত্রী। অনেকেই টিকেট না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ টি ইউনিটে আগামী ২৫ থেকে ২৭ জুলাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের চাপ বেড়েছে রেলভ্রমণে। ফলে খুলনা রেল স্টেশনে টিকিটের জন্য ভীড় করছেন তারা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অংশ নেওয়ার জন্য খুলনার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে রেলস্টেশনে ভিড় করতে থাকে। সকালে ১০ জন নেওয়ার পর টিকেট শেষ হয়ে যায়। যা নিয়ে স্টেশনে শোরগোলের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকও লাইনে দাঁড়ায়। কিন্তু লাইন শেষ হয়না। অনেকে টিকিট না পেয়ে রাজশাহী যাওয়ার ভিন্ন পথ অবলম্বন করেন।
নগরীর আহসান আহমেদ রোডের বাসিন্দা মো: সাইফুল্লাহ বলেন, আগামী ২৫ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক, খ, গ ইউনিটে পরীক্ষা হবে। তিনি খ ইউনিটে পরীক্ষা দিবেন। ২৬ জুলাই তার এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। অগ্রীম টিকিট নেওয়ার জন্য তিনি মঙ্গলবার রাত ১ টার দিকে রেলস্টেশনে অবস্থান করেন। সকাল ৮ টার দিকে রাজশাহী গামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ১০ মিনিটের মধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে মাত্র ১০ জন টিকিট পেয়েছে বলে তিনি জানান। পরে জানতে পারেন টিকেট শেষ হয়ে গেছে। টিকিট নেওয়ার জন্য তিনি বুধবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে। কিন্তু সে সময়েও তিনি টিকিট পাননি।
মেহেদী হাসান, টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা। টিকিট নেওয়ার জন্য ভোর ৫ টায় এসে লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু কাঙ্খিত টিকিট তিনি পাননি।
বুধবার বিকেলে তিনি এ প্রতিবেদকে অভিযোগ করে বলেন, টিকেট বিক্রির আগে কয়েকজন অনাকাঙ্খিত ব্যাক্তি এসে লাইনে দাঁড়ায়। তারা সকল টিকিট কেটে নেয়। ৩শ’১৫ টাকার টিকিট তারা ১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। তাদের সংখ্যা এখানে অনেক। কিছু জিজ্ঞাসা করলে সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। লাঞ্চিত হওয়ার ভয়ে তিনি কিছু বলতে সাহস পাননি।
মাহিমা তাসনিম, বসুপাড়া এলাকার বাসিন্দা। খ ইউনিটে পরীক্ষা দিতে রাজশাহী যাবেন। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এসে দীর্ঘ লাইন দেখেন। পরে সেখানে অবস্থান করেন। ক্লান্ত হলে বাড়ি থেকে মাদুর এনে বিশ্রাম নেন। পরে তার বাবা এসে খাবার খায়িয়ে দেন।
সিথি রানী দাস বলেন, টিকিট গ্রহণ যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য সকাল থেকে অবস্থান করছেন স্টেশনে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও তিনি টিকিট পাননি।
অভিযোগ করে বলেন, তার রুমের দু’জন দু’জন সকলে টিকেট পেয়েছে। কিন্তু তিনি পাননি। কিভাবে তারা পেল জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিশেষ সময় এলে কালোবাজারের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে যায়। তাদের কারণে সাধারণ যাত্রীরা এ ভোগান্তির শিকার হন। এসকল ভোগান্তি এড়ানোর জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এমএম