সরকার ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ করার পর ৮ দিন অতিবাহিত হলেও খুলনার বাজারে তার কোন প্রভাব পড়েনি । বর্ধিত আগের দরেই সয়াবিন বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। মূল্য না কমায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
নগরীর কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এক লিটার ও পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন যথাক্রমে আগের দাম ১৯৫ ও ৯৬০ টাকায়। অথচ ১৭ জুলাই তেলের দাম কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। ১৮ জুলাই থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী ১ লিটার সয়াবিন বোতলের মূল্য ১৮৫ টাকা, ৫ লিটার বোতলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ৯১০ টাকায়। কিন্তু ৮ দিন পার হলেও খুলনার বাস্তব চিত্র ছিল ভিন্ন।
নগরীর রূপসা বাজারের ব্যবসায়ী নান্টু বলেন, দাম বৃদ্ধির আগাম সংবাদে অতিরিক্ত তেল মজুদ করেছিলেন। কিন্তু সরকার দাম কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করে দেওয়ায় তিনি ব্যবসায় লসের সম্মুখীন হয়েছেন। প্রতি এক ও পাঁচ লিটার তেলের বোতল যথাক্রমে ১৯৫ ও ৯৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
একই বাজারের ব্যবসায়ী মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে নতুন রেটের তেল এখনও আসেনি। কোম্পানী আমাদের যে দরে মাল দিচ্ছে, সেই দরে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন রেটের মাল কবে আসবে তা তিনি সঠিক করে বলতে পারেন না।
নিউ মার্কেট কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন বলেন, সরকার তেলের দাম ১৪ টাকা কমিয়েছে, যা তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে শুনেছেন। কিন্তু কোম্পানীগুলো এখনও দাম কমায়নি। বর্ধিত মূল্যের অনেক বোতল তার ঘরে রয়েছে। সংবাদ জেনে টাকা আটক না রেখে কম দামে বিক্রি করছেন তিনি।
একই বাজারের ব্যবসায়ী বিমল কৃষ্ণ বলেন, “কোম্পানী না কমাইলে ডিলাররা কমাই না। তবে ফ্রেস কোম্পানী তেলের দাম ১৪ টাকা কমিয়েছে।”
রূপসা বাজারের ক্রেতা এনামুল বলেন, দাম বৃদ্ধির আগাম খবর জানতে পারলে ব্যবসায়ীর বাড়তি দামে বিক্রি শুরু করে। দাম কমিয়ে সরকার তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। সে দরে তারা বিক্রি না করে বাড়তি দরে বিক্রি করছেন।
ওই ক্রেতারা কথা শুনে পাশের এক ক্রেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, দাম কমেছে এমন কোন জিনিষ বাজারে পাওয়া যাবেনা। কিন্তু যাদের দেখার কথা তারা দেখে না।
ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারে ক্রেতা সাগর বলেন, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দাম বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এখন দাম কমানোর ঘোষণা ৮ দিন আগে দেওয়া হলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে তারা এ পণ্যের দাম কমাচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
খুলনা ভোক্তা অধিকার সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম খুলনা গেজেটকে বলেন, নতুন রেটের মাল এখনও বাজারে আসেনি। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত দরে মাল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা এমন খবর আমাদের কাছে নেই। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ