সরকার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি খুলনার বাজারে। আগের দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অপরদিকে একসপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে চালের দাম। মানভেদে প্রতিকেজি চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা করে বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক লিটার সয়াবিন তেল ১৭০, পাঁচ লিটারের দাম ৭৯০ ও প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে বাণিজ্যমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও চালের দাম কমেনি বরং মানভেদে প্রতিকেজি চালে দুই থেকে তিন টাকা করে বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বড় বাজারের তেল ব্যবসায়ী ও রেজা এ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক শাহ আলম সরদার বলেন, আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমানোর পর তেলের দাম কমানো হয়েছে। কিন্তু রোববার সরকার তেলের দাম বেঁধে দিয়ে যে ঘোষণা দিয়েছে সে রেটে বর্তমানে বিক্রি করতে গেলে তার অনেক লস হবে। এমনিতে ব্যবসায়ীরা লসের সম্মুখীন হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বড় বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে যে পরিমাণ তেল আছে তাতে সরকার নির্ধারিত দরের থেকে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ফলের দাম বেড়েছিল সেটি ঠিক, কিন্তু কি পরিমাণ বেড়েছিল তার হিসাব কেউ জানেনা। তিনি সরকারের বর্তমান সরকারের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানান। বড় বাজারের এমন অনেক ব্যবসায়ী আছেন যাদের হাজার হাজার কেজি তেল মজুদ আছে। তিনি তেলের মিলগুলোর প্রতি সরকারের নজরদারি বাড়ানোর প্রতি অনুরোধ করেছেন।
বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো: ফারুক হোসেন বলেন, গেল এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ধান সংকটে এ মূল্যবৃদ্ধি। তবে বৈশাখ মাসে নতুন ধান উঠলে বাজার কিছুটা কমতে পারে বলে তার ধারণা।
রূপসা বাজারের চাল বিক্রেতা জাকারিয়া জানান, প্রতি বস্তায় একশ’টাকা করে বেড়েছে। বড় বাজার থেকে বেশী দরে কিনে এ দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৬৮ টাকা, বাসমতি চাল ৭২ টাকা ও নাজিরশাল ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন।
ওই বাজারে অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে গত চার মাসের বেশী ভারতীয় চালের আমদানি নেই। চাল কলগুলোর মালিক সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়েছে। তারা ধান মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারকে অস্থির করে রাখছে।
তিনি আরও বলেন, উত্তরবঙ্গে এমন কয়েকটি মিল আছে যেখানে হাজার হাজার মন ধান মজুদ রাখে তারা। চালের দাম না বাড়িয়ে তারা বাংলাদেশের মানুষকে তিনমাস খাওয়াতে পারে। ওই মিলগুলোতে অভিযান চালালে সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।
ক্রেতা শহিদুল বলেন, ‘কে শোনে কার কথা। রোববার বাণিজ্যমন্ত্রী কুষ্টিয়ায় কয়েকটি মিল পরিদর্শন শেষে মিল মালিকদের প্রতিকেজি চালের দাম কমপক্ষে দুই টাকা কমানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু বাজারে চাল কিনতে এসে দেখি আগের তুলনায় বস্তায় ১০০ টাকা করে বেড়েছে। তেলের দর নির্ধারণ করে দিয়ে ঘোষণা দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।’ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যর দাম নির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ এস আই