ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’এর প্রভাবে প্লাবিত খুলনার উপকূলীয় তিন উপজেলা। এ উপজেলাগুলোর ছয় হাজার বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে। উপজেলাগুলো হচ্ছে কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ। আইলা ও আম্ফানের বড় সাক্ষী এ তিন উপজেলা। বুধবার (২৬ মে) বেলা ১১ টার পর থেকে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করে । পরবর্তীতে নদী উত্তাল হয়ে উঠলে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
জেলার কয়রায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া, পবনার বেড়িবাঁধ, মঠবাড়ি মঠের কোনা, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ননের চোকুনী, তেঁতুলতলার চর, শিংগির-কণা, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে গাতিরঘেরী, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে আংটিহারা ও বিনাপানি পদ্মপুকুর। এ উপজেলায় দূর্যোগের কবলে ২৩ সহস্রাধিক মানুষ ।
পাইকগাছার সদর, কাঁচামালের পট্টি, সোনা পট্টি, কাপড়ের পট্টি, কাঁকড়া পট্টি, মাছ বাজারসহ পৌর বাজারের সকল রাস্তা পানির নিচে। কপিলমুনির আগড়ঘাটা বাজার সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ, দেলুটির চকরিবকরি, গেয়ুবুনিয়া, মধুখালী, পারমধুখালী, রাড়–লীর মালোপাড়র বাঁধ ভেঙ্গে এলাকায় পানি ঢুকেছে।
এছাড়া দাকোপ উপজেলার কামিনিবাসিয়া, পানখালী এবং মেরিন কোম্পানির আশপাশ সহ বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে।
কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের এ তিন উপজেলায় ৬ সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তার মধ্যে কয়রায় পাঁচ হাজার, পাইকগাছায় দুই শ’ ও দাকোপ ছয় শ’ জন । আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ ৫০ পরিবার ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ১ হাজার ২ শ’ পরিবার।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, প্লাবিত এলাকার মানুষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে আছেন। তাদের খাবার উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনীতিকরা সরবরাহ করছেন।
দাকোপের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাস জানান, আটটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে মোট ৬শ’ সাধারণ মানুষ। তাদের তদারকি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, গেল বছরের আম্ফানে জেলায় তিনজন গাছ পড়ে, ২০০৯ সালের ২০ মে আইলায় দাকোপে ৬৫ জন এবং সিডরে কয়রার ১৬ জন শ্রমিক মারা যান। তারা পিরোজপুরে কাজ করতে যেয়ে মারা যান।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি