খুলনায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের বাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকালের পর থেকে রাত পর্যন্ত এসব স্থানে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। বিভিন্ন আবাসিক ভবনের সিসি ক্যামেরাও ভাংচুর করা হয়।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা খুলনা মহানগর ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়, নগরীর শেরে বাংলা রোড়ের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও তার ভাই সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করে। হামলা হয় নগর ভবন, জেলা পরিষদ ও প্রেস ক্লাবে। পরে আরেক দফা ভাংচুর করে প্রেস ক্লাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বিকালে শিববাড়ি মোড়ে সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে আন্দোলনকারীরা নগরীর পিটিআই মোড়ে ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল আহসান টিটোর কার্যালয়, রয়্যাল মোড়ে ২৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল ইসলাম টিটোর ব্যক্তিগত কার্যালয়, গল্লামারী এলাকায় যুবলীগ নেতা শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
শেরে বাংলা সড়কে আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন হোটেল গ্রান্ড প্লাসিড ও ফারাজীপাড়া এলাকায় মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশের ফ্লাটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এছাড়া শেখপাড়া এলাকায় ২০ নং ওয়ার্ড আ.লীগ কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। এ সময় সিসি ক্যামেরা থাকা আশপাশের বাড়িতেও ভাংচুর করা হয়।
নগরীর কেডিএ এভিনিউতে বাংলালিংক অফিস ভাংচুর করে সামনে ৪টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
দুপুরে আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর ব্যক্তিগত কার্যালয় ও খুলনা ক্লাবে ভাংচুর করে। তারা খুলনা ক্লাব, সংসদ সদস্যের অফিসের নিচে থাকা ৩টি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
ফিরে যাওয়ার সময় তারা নগরীর গ্যালাক্সি মোড়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় রাফসান নামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেন। তার প্রচেষ্টায় বড় ধরনের সংঘাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
সেখান থেকে ফিরে আন্দোলনকারীরা গগণবাবু রোডের সিটি মেয়রের বাড়িতে ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। সারাদিন পর ওই স্থানে পুলিশ আসে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে।
খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক জানান, তার বাড়িতে ২ দফায় হামলা হয়েছে এবং সংসদ সদস্য শেখ হেলালের বাড়িতে ২ দফায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আন্দোলনকারীরা।
তারা রূপসা মোড় থেকে কয়লা ঘাট পর্যন্ত যতো সরকারি দপ্তর রয়েছে, সবগুলোতে ভাংচুর চালায়। রূপসা ঘাটে অবস্থিত রিভার ভিউ রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে সব তসনছ করে দেয়। হামলা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার অধিকারীর বাসভবনেও।
আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় ছিল।
এজন্য রোববার সন্ধ্যার পর বিকালে নগরীর খালিশপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের বাড়ি, খালিশপুর থানা বিএনপি ও ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে ভাংচুর হয়। এজন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে বিএনপি নেতারা।
খুলনা গেজেট/হিমালয়