খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

খুমেক হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রান্নাঘরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় রোগীদের নিম্নমানের খাবার ও পরিমাণে কম দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়।

দুদকের খুলনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, তারা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পান। এর ভিত্তিতে রান্নাঘরে দুপুরের খাবার যাচাই করা হয়। ১ হাজার ৩৩৫ জনকে খাবার দেওয়ার কথা থাকলেও রান্না মুরগির পিস পাওয়া যায় ১ হাজার ৯৪টি। বাকি ২৪১ জনের খাবার কম ছিল। প্রতি পিস মাংসের ওজন হওয়ার কথা ৯৫ গ্রাম। কিন্তু মাংসের পিস মেপে দেখা যায় ওজন ৪ ভাগের ১ ভাগ। ভালো মানের চিকন চালের ভাত দেওয়ার কথা থাকলেও রান্না করা ভাত ছিল মোটা চালের।

দুদক কর্মকর্তা জানান, তারা রান্নাঘরে ঢোকার সময় দেখেন কিছু মালপত্র নিয়ে একজন পালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে আটক করলে তাঁর কাছে ৪ কেজি মুরগির মাংস, ৪৯টি ডিম, ৮ পাউন্ড রুটি, কয়েকটি লাউ, দুই পলিথিন ভর্তি ভাত, ২ কেজি চাল, পেঁয়াজ, শুকনো মরিচ, কলা, তেল, ডাল পাওয়া যায়। এগুলো আবার রান্নাঘরে রাখা হয়। এগুলো রোগীদের খাবার হিসেবে ছিল; কিন্তু রোগীদের না দিয়ে চুরি করা হচ্ছিল।

রান্নাঘরে গিয়ে সুপারভাইজার হাবিবকে পাওয়া যায়নি। আউটসোর্সিংয়ের এক কর্মচারীকে পাওয়া যায়। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। প্রতিদিন খাবারের নমুনা পরীক্ষার নিয়ম আছে। নমুনা হিসেবে যে খাবার পাঠানো হচ্ছিল, তার মান ভালো। কিন্তু রোগীদের যে খাবার দেওয়া হচ্ছিল, তা নিম্নমানের ও পরিমাণে অল্প।

তিনি জানান, খাবারের নমুনা পরীক্ষার জন্য এক পিস মাংস দেওয়ার কথা। কিন্তু পরীক্ষা করানোর কথা বলে কর্মচারীরা রান্নাঘর থেকে ২০-৩০ জনের খাবার নিয়ে যাচ্ছিল, যা অনিয়ম। কর্মচারীদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, বিভিন্ন লোকজনকে দিতে হবে। কিন্তু আবাসিক মেডিকেল অফিসার ছাড়া আর কারও নাম বলতে পারেননি।

দুদকের উপপরিচালক বলেন, ‘আমরা রান্নাঘরে ঢোকার আগে আরও কয়েকজন খাবার নিয়ে গেছে বলে জেনেছি। কিন্তু আমরা একজনকে খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় হাতেনাতে ধরি।’ তিনি বলেন, রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম-দুর্নীতি পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযানের সময় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. নুরুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ডা. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা শুদ্ধি অভিযানের একটা অংশ। দুদকের অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা যে অসংগতিগুলো তুলে ধরেছেন, এগুলো আমরা দেখেছি, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!