খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিইসিসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ আজ
  অ্যান্টিগা টেস্ট: ৪৫০ রানে ইনিংস ঘোষণা ওয়েস্ট ইন্ডিজের, দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ৪০/২
সিলেট টেস্ট

খালেদের পর রানার তোপে তিনশ’র আগেই থামল শ্রীলঙ্কা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বৃষ্টিস্নাত সিলেটের সবুজ উইকেটে প্রথম সেশনে স্বপ্নের মতো শুরুর পর দ্বিতীয় সেশনে হাহাকার। শুরুতে পেসার খালেদ আহমেদের দাপটের পর ব্যাট হাতে পাল্টা জবাব দেয় শ্রীলঙ্কা। ষষ্ঠ উইকেটে দ্বিশতরানের জুটি গড়া কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা দুজনই ছুঁয়েছেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা নাহিদ রানা শুরুর দিকে এলোমেলো বোলিংয়ে দেদারসে রান দিলেও শেষ বেলায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন।

তরুণ এই পেসারের তোপেই শেষ পর্যন্ত বেশিদূর এগোতে পারল না সফরকারীরা। ৬৮ ওভার ব্যাট করে ২৮০ রানে থেমেছে লঙ্কানদের ইনিংস। সমান ১০২ রানের ইনিংস খেলেছেন ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। অন্যদিকে, বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন খালেদ আহমেদ ও অভিষিক্ত নাহিদ রানা। এ ছাড়া শরিফুল নিয়েছেন একটি উইকেট।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম সেশনে বলতে গেলে লঙ্কানদের দুমড়েমুচড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ৫৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ফিল্ডিং বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা দারুণভাবে কাজে লাগান টাইগার পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নিশান মাদুশকাকে ফেরান তিনি। তৃতীয় স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ বলে ২ রান করে ফেরেন লঙ্কান এই ওপেনার।

নিশান মাদুশকার উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দিচ্ছিলেন দিমুথ করুনারত্নে ও কুশাল মেন্ডিস। ৫৭ বলে ৩৭ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছিলেন তারা। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই আবারও আঘাত হানেন খালেদ। ১২ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দারুণ এক বাউন্সার বুঝে উঠতেই পারেননি কুশাল মেন্ডিস। গালি অঞ্চলে ক্যাচ লুফে নেন জাকির। ফেরার আগে ২ চারে ২৬ বলে ১৬ রান করেন মেন্ডিস। একই ওভারে দিমুথ করুনারত্নেকেও সাজঘরে পাঠান টাইগার এই পেসার। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ঠিকঠাক খেলতে পারেননি লঙ্কান এই ওপেনার। ব্যাটের ফাঁক গলে বল গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে।

টপঅর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, তখন সফরকারীদের চাপ আরও বাড়ায় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ‘দৃষ্টিকটু’ রানআউট। খালেদ আহমেদের করা বল কাভারের দিকে ঠেলে সিঙ্গেলসের জন্য দৌড় দিয়েছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। অন্যপ্রান্তে ম্যাথিউস ধীরলয়ে যতক্ষণে এসে পৌঁছালেন, তার আগেই মিডঅফ থেকে দৌড়ে এসে সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

মধ্যাহ্ন বিরতির পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজনের ব্যাটে ভর করে ম্যাচে ফেরে সফরকারীরা। অভিষিক্ত নাহিদ রানা ছিলেন সবচেয়ে খরুচে। নিজের প্রথম ৮ ওভারে খরচ করেছেন ৫৮ রান।

শেষমেশ তরুণ এই পেসারের হাত ধরেই বহুল কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু পায় বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানো কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেটটা তুলে নেন অভিষিক্ত এই টাইগার পেসার। নাহিদের বাউন্সারে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে তুলে দিয়েছিলেন কামিন্দু। ১১ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে ১২৭ বলে ১০২ রান করেছেন লঙ্কান এই ব্যাটার। তার বিদায়ে ভাঙে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে গড়া ২০২ রানের জুটি।

অবশ্য রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে পারতেন কামিন্দু। ইনিংসের ১৭ তম ওভারে শরিফুল ইসলামের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটের কানায় লেগে চলে গিয়েছিল স্লিপে। বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হন মাহমুদুল হাসান জয়। নিশ্চিত জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করেই তবে ফিরলেন শেষমেশ।

কামিন্দুর বিদায়ের পর একই ওভারে নাহিদ রানার বল সীমানা ছাড়া করে ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি ছুয়ে ফেলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও। অবশ্য প্রতিশোধ তুলতেও সময় নিলেন না তরুণ পেসার। নিজের ফিরতি ওভারে আক্রমণে এসে লঙ্কান অধিনায়ককেই লক্ষ্যবস্তু বানালেন। ১৪২ কিলো গতির বাউন্সারে পুল করার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেন ডি সিলভা। ডিপ স্কয়ার লেগে কোনো ভুল করলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩১ বলে ১০২ রান করেন লঙ্কান কাপ্তান।

প্রথম দুই সেশনে উইকেটের অপেক্ষায় থাকা নাহিদ রানা শেষ বেলায় এসে পরপর তিন ওভারে তুলে নিলেন তিন উইকেট। দুই সেঞ্চুরিয়ানের পর লেজের দিকের ব্যাটার প্রবাথ জয়াসুরিয়াকেও ফেরালেন। এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি সফরকারীরা। রান আউটে সমাপ্তি ঘটে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের। কাসুন রাজিথার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে আউট হন লাহিরু কুমারা। ২৮০ রানে থামে তাদের ইনিংস।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!