খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১৫
  ময়মনসিংহে ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের মৃত্যু
  এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যা নিয়ে দুনিয়ার সামনে গর্ব করা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা-বিপণনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

কয়রায় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নির্দেশে স্থানীয় মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তুলে এনে ইউনিয়ন পরিষদে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই অধ্যক্ষের স্ত্রী পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। বর্তমানে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কয়রা উত্তরচক আমিনীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো: মাসুদুর রহমান জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। একইসঙ্গে তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের নিকট দেওয়া অভিযোগ ও এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন- গত সোমবার (১৮ জুলাই) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মাদ্রাসায় বসে কাজ করছিলেন। এসময় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম এবং ওই মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তফা আব্দুল মালেকের নির্দেশে স্থানীয় ইউনুসুর রহমান বাবু, মোঃ নিয়াজ হোসেন, মাসুদুর রহমান, মিলন হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রিয়াল, আমিরুল, অমিত মন্ডল, রফিকুল গাজী, সাদিকসহ ১৫/২০ জন লোক তাকে জোর করে ধরে রুম থেকে কলার ধরে বের করে নিয়ে আসে। এসময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এরপর তাকে সেখানেই ফেলে চোখে, ঘাড়ে, কানে পিঠে এলাপাতাড়িভাবে মারপিট করে।

এরপর তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে চেয়ারম্যানে বাহারুল ইসলামের অফিসের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। চেয়ারম্যান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাকে আঘাতের নির্দেশ দেয়। সেখানেও তাকে বেদম মারপিট করে। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং কানের পর্দা ফেটে যায়। সেখানে চেয়ারম্যান তাকে মাদ্রসা থেকে পদত্যাগ করতে বলে। বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরিবার প্রথমে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছেন।

ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ মো: মাসুদুর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় ইউপি চেয়ারম্যানকে সভাপতি না করায় তার নির্দেশে আমাকে মারপিট করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাকে তার অফিস কক্ষে তুলে নিয়ে গালিগালাজ ও মারপিট করা হয়। এতে চোখে রক্তজখম এবং কানের পর্দা ফেটে গেছে। আমার স্ত্রী পুলিশ নিয়ে আমাকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে কয়রা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে এখনও মামলা হয়নি। কয়রা থানার ওসি আমাকে কল দিয়েছিলেন। তিনি মূল কপি আমাকে দিতে বলেছেন। আমি হাসপাতালে থাকায় লোকমারফত অভিযোগ থানায় পাঠিয়েছি এবং জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি বলেন, আমার যদি কোন অপরাধ থাকে তাহলে পুলিশ আছে, আইন আছে। তাহলে কেন আমাকে তুলে নিয়ে মারপিট করা হলো।

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন, ওই মাদ্রাসায় আমাকে সভাপতি করার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করা হয়। বিষয়টা নিয়ে মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে আমার মনমালিন্য হয়।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মূলত মাদ্রাসার এক স্টাফকে অধ্যক্ষের লোকজন মারপিট করে। এ নিয়ে ঝামেলা চলছিল। পরে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানকে নিয়ে কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদে আসে। আমি বিষয়টি মিমাংসার করে তার স্ত্রীর কাছে দিয়ে দেই এবং বলি আপনারা থানায় যাবেন নাকি বাড়িতে। তারা বললো বাড়িতে যাবে। সেইভাবে তাদের যেতে দেওয়া হয়৷ এখানে পূর্বের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আমাকে মারপিটের সাথে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

কয়রা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএমএস দোহা বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। আজ যোগদান করেছি, বিষয়টি শুনেছি। তিনি ভুক্তভোগী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে সেটি ফটোকপি। মূলকপি দিতে বলা হয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনা গেজেট / আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!