কেশবপুরে অসহায় এতিম সুইটি খাতুন ও তার ৫ মাসের শিশু কন্যা তুবাতুল জান্নাতের পাশে দাঁড়ালো ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। এ সময় গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে অসহায় এতিম পরিবারকে ঈদ সামগ্রী ও শিশু খাদ্যসহ নতুন জামা-কাপড় প্রদান করা হয়।
কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া গ্রামের পিতা মৃত সাদেক আলী গাজী ও মৃত জোহরা বেগমের মেয়ে পিতা-মাতা হারা অসহায় এতিম সুইটি খাতুনের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে একই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক গাজীর ছেলে রাজু আহম্মেদ প্রেমের ফাঁদে ফেলে অভিনব প্রতারণার খবর জানতে পেরে ওই এতিম সুইটি খাতুন ও তার শিশু কন্যা তুবাতুল জান্নাতের পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
সুইটি খাতুন ও তার শিশু কন্যা মানবেতর জীবন-যাপন করায় ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটির পক্ষ থেকে ১০ কেজি চাল, ২ লিটার তেল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি রসুন, ১ কেজি চিনি এবং শিশু কন্যা তুবাতুল জান্নাতের জন্য ২ সেট ঈদের নতুন পোষাক, ২ প্যাকেট ল্যাক্ট্রোজেন- ১ (শিশু খাদ্য), ৪ প্যাকেট সুজি প্রদান করেন সংগঠনের সভাপতি শামীম আখতার মুকুল।
ওই সময় সুইটি খাতুন তার স্বামীর অভিনব প্রতারণার বিষয়টি সকলের সামনে উপস্থাপন করে আইনগত সহযোগিতা চাইলে সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনগত সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় সুইটি খাতুন তাকে প্রতারণা করে তালাক দেওয়া হয়েছে তার কপি ও ৭নং পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর সমস্যা সমাধানের আবেদনের কপি এবং বিবাহর নিকাহনামা প্রদান করে।
এ সময় ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার কেশবপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুম্ময় হাওলাদার বিকাশ, সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল হোসেন ডাবলু, সাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জ্বল অধিকারী, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসাইন, মানবাধিকার বিষয়ক সচিব মৃদুল সরকার, গণমাধ্যম বিষয়ক সচিব রবিউল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ওলিয়ার রহমান, প্রচার সম্পাদক সোহেল পারভেজ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সৌরভ কবীর, পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য শিউলী হালদার, আব্দুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রবিউল ইসলাম, ইউনুছ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালে প্রতিবেশী পাঁজিয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক গাজীর ছেলে রাজু আহম্মদ একই গ্রামের মৃত সাদেক আলী গাজী ও মৃত জোহরা বেগমের মেয়ে অসহায় এতিম সুইটি খাতুনের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অভিনব কায়দায় ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জজকোর্টে এ্যাফিডেভিট করে সাতক্ষীরার নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা কাবিনে বিবাহ করে এবং সাতক্ষীরা শহরেই বাসা ভাড়া করে বসবাস করতে থাকে। সেখানেই বসবাসরত অবস্থায় সুইটি খাতুন অন্তসর্তা হয়ে পড়ে। এর পর রাজু আহম্মেদ স্ত্রী ও সন্তানের মর্যাদা দেবে না মর্মে পিতামাতাকে গোপন করে কেশবপুর পৌরসভার বায়সা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। এরই মধ্যে রাজু’র ভগ্নীপতি মনিরামপুরের নেহালপুর গ্রামের মুনসুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেনের সহযোগিতায় সুইটি খাতুনকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার এবং যশোর জজকোর্টে নিয়ে তালাক দেওয়ার চেষ্টা করে। বর্তমানে প্রতারক স্বামী আত্মগোপনে রয়েছে। সে কারণে পিতা-মাতা হারা এতিম সুইটি খাতুন তার শিশু কন্যাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করায় স্বামীর সংসার ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি