খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  রিসেট বাটন বলতে ৭১ এর গর্বিত ইতিহাস নয় দূর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতি মুছে নতুন সূচনার কথা বলেছেন ড. ইউনূস : প্রেস উইং
  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

কী কার‌ণে তেরখাদার দ্বীন ইসলামকে হত্যা, জানা গেল তিন বছর পর(ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘটনাটি ২০১৯ সালের ২২ জুলাই। দুপুরে তেরখাদা উপজেলার লস্করপুর গ্রামে হঠাৎ নিখোঁজ হয় দ্বীন ইসলাম নামে ১১ বছর বয়সী একটি শিশু। নিকট আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে ব্যর্থ হয় তার পরিবার। মাইকিং করা হয় গ্রামে গ্রামে। পরবর্তীতে তার খোঁজ মেলে। ত‌বে জী‌বিত নয়, মৃত অবস্থায়। স্থানীয় মুুলিশিয়া খাল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

প্রথমে ঘটনাটি অপমৃত্যু ব‌লে প্রচার করা হলেও পরবর্তীতে হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। তিন বছর পর এ হত্যা মামলার দু’জন আসামিকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। তাদের কাছ থেকে এ হত্যার রহস্যও বের করেছে এ সংস্থাটি।

গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলো, তেরখাদা উপজেলার লস্করপুর গ্রামের মো: কালন শেখের ছেলে মো: মুছা শেখ ও একই এলাকার ইমলাক শেখের ছেলে মো: হানিফ শেখ।

রোববার(১০ এপ্রিল) খুলনা পিবিআই কার্যালয়ে আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, দ্বীন ইসলাম তেরখাদা উপজেলার লস্করপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। বিভিন্ন খাল থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করত তারা। মাঝেমধ্যে বাবাকে মৌসুমী ফল বিক্রি করতে সাহায্য করত।

‘২০১৯ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সাথে একটি খালে সাতার প্রতিযোগীতায় অংশ নেয় দ্বীন ইসলাম। ষষ্ঠ হওয়ায় ওই যুবকরা তাকে ব্যাঙ্গ ও বিদ্রুপ করতে থাকে। দ্বীন ইসলাম তাদের উদ্দেশ্যে করে গালিগালাজ করতে থাকে। এটি সহ্য করতে না পেরে মুছা শেখ তাকে লক্ষ্য করে একটি ঢিল নিক্ষেপ করে। পরে উপস্থিত সবাই দ্বীন ইসলামের মাথায় ইট মারে। ইটের আঘাতে সে জ্ঞান হারিয়ে খালের পানিতে ডুবে যায়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নেওয়া হয়। তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে স্থানীয় মুলিশিয়া খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।’

দ্বীন ইসলাম মৃত‌্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু ময়না তদন্তে তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ ভিকটিমের বাবাকে মামলা দায়ের করতে বললে তিনি মামলা করেনি। পরে তেরখাদা থানার এসআই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। দ্বীন ইসলামের পিতা ন্যায় বিচারের জন্য আদালতে প্রার্থনা করেন। ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই গ্রহণ করে।

মামলাটি গ্রহণ করে ওই এলাকায় বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করে পিবিআই। পরে এ মামলার সন্দেহভাজন দু’ আসামি উতর আলী সরদার ও ফেরদৌস শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকেও গুরত্বপূর্ণ তথ্য বের করা হয়। তবে মুছা ও হানিফ হত্যার খবর জানতে পেরে এলাকা ত্যাগ করে চট্রগ্রামে অবস্থান করে। এ দু’জনেরই নিজস্ব কোন মোবাইল ছিলনা। পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের নম্বর ব্যবহার করত তারা।

একটি সোর্সের মাধ্যমে পুলিশ মুছার সন্ধান পায়। চট্রগ্রামের পিবিআইয়ের সহায়তায় প্রথমে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। মুছাকে গ্রেপ্তারের পর এ মামলার অপর আসামি মো: আবু হানিফকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পিবিআই। তারা দু’জনই আদালতে এ হত্যাকান্ডে নিজেদের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। মামলার অপর আসামি হানিফ সরদার পলাতক রয়েছে। এ নিয়ে এ মামলায় মোট চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!