‘একটা সেরা দিন কাটিয়ে দিলাম, বুঝতেই পারিনি কিভাবে দিনটি পুরিয়ে গেল। নেচেছি, গেয়েছি.. কোন চিন্তা নেই, কেউ বকাও দেয়নি। মনটা ভাল হয়ে গেল। প্রতিবছরই এমন আনন্দ চাই, উৎসব চাই।’ এভাবেই নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে গভঃ ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম রিমা। শুধু সানজিদাই নয়, নিজের আনন্দ লুকিয়ে রাখতে পারছিল না স্কুলটির তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রুহানি, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী উম্মে রুবাইয়া, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতী। সকলের সমস্বরে অভিব্যক্তি, আজকের দিনটা এ বছরের সবচেয়ে বড় দিন। এই দিনটা আসলেই খুব আনন্দের, দিনটা যেন প্রতিবছর আসে; প্রত্যেক বছর যেন এমন দিন আসে, ওয়াও….।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) গভঃ ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শিক্ষা পরিবারের আয়োজনে বার্ষিক প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে এভাবেই আনন্দ উল্লাসে মেতেছিল শিক্ষার্থীরা। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় খুলনার তেলিগাতী কুয়েট রোডের গভঃ ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরাও ছিল গৃহবন্দী। আনন্দ-বিনোদন বলতে ছিলো টিভি আর মোবাইলের ফোনের গেমস। ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্ছাস প্রকাশের কোন ক্ষেত্র ছিলোনা। করোণার প্রকোপ শেষ হলে স্কুল চালু হলেও বাধাধরা গণ্ডি পেরুতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। তাই স্কুলের বার্ষিক প্রীতিভোজ তাঁদের নতুন প্রাণ দিয়েছে। দিয়েছে নতুন বছরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দুরন্ত গতি।
স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, সপ্তাহ খানেক আগে গভঃ ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শিক্ষা পরিবারের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বার্ষিক প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ খবর দ্রুতই পৌঁঁছে যায় প্রায় সাড়ে ১১’শ শিক্ষার্থীর কাছে। প্রথমে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল ড্রেস পড়ে অনুষ্ঠানে আসার সিদ্ধান্ত হলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ৯ম এবং ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিজের পছন্দের পোশাক পরিধানের আবেদন করেন। অবশেষে প্রধান শিক্ষকও শিক্ষার্থীদের আবেদনে সাড়া দেন। অপেক্ষার পালা শেষে শিক্ষার্থীদের আবেগ,আনন্দ, খুশী আর উচ্ছ্বাস প্রকাশেেই পার করে দিনটি।
ঘড়ির কাটা ন’টা পেরুত্বেই রঙ বেরঙের ড্রেস পরিহিত শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয় বিদ্যালয় চত্বর। তাঁরা সহপাঠীদের সাথে দিনভর জমজমাট আড্ডা, গল্প, মঞ্চে নেচে গেয়ে, আনন্দ, খুশী আর উৎফুল্লতার মধ্য দিয়ে একটি দিন অতিবাহিত করলো। তাদের এ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারাও অংশ নেয়। সিনিয়র সহকারি শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী মঞ্চে গান গাইলে ছাত্র/ছাত্রীরা আরো উচ্ছ্বসিত হয়। মধ্যাহ্নভোজের পর অনুষ্ঠিত হয় রাফেল ড্র। একটানা বিকেল ৪ টা পর্যন্ত চলে ছাত্র-ছাত্রীদের আবেগ, আনন্দ, উৎফুল্লতা, খুশী, আর উচ্ছ্বাস।
শিক্ষার্থীদের আনন্দ আয়োজনে সামিল হন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটি) মুকুল কুমার মৈত্র, সহকারি কমিশনার অপ্রিত, খানজাহান আলী থানা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, একাডেমিক সুপারভাইজার, ইকবাল নগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলামসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ , বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন জুন্নুর।
খুলনা গেজেট/কেডি