খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত
  খুলনার ফুলতলা উপজেলায় সুমন মোল্লা নামের একজনকে গুলি করে হত্যা
  সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পুড়ে যাওয়ার তথ্য সঠিক নয় : ডিএমপি
  মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি ৬ মে পুনর্নির্ধারণ

আড়‌তে ২৮ টাকায় বি‌ক্রি করা বেগুন খুচরায় ক্রেতা কিন‌ছেন ৬০ টাকায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজারে সংকট বলে কিছু নেই। ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা লাভের আশায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। হাত বদলের খেলায় বাড়ছে বেগুনের দাম। ২৮ টাকায় যে বেগুন পাইকা‌রি বাজা‌রের আড়‌তে বি‌ক্রি কর‌ছেন কৃষক, খুচরা বাজারে ৬০ টাকায় তা কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তবে পাইকারী বাজার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ কাঁচা বাজারে আসতে পরিবহনগুলোকে ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হয়। যার প্রভাব পড়ে পণ্যের উপরে।

সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনাল খুলনা মহানগরীর অন্যতম পাইকারী কাঁচা বাজার। প্রতিদিন খুব ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হতে চাষীরা তাদের পণ্য এ বাজারে বিক্রি করতে আসেন। বাজারে আসলে পণ্যের দাম থাকেনা। আর ক্রেতাদের কিনতে গেলে পকেটে টাকা থাকেনা।

ডুমুরিয়ার কৃষক মো: কামরুল শেখ বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। বেগুনের ফলন গতবারের তুলনায় এবার ভাল। তিনদিন পরপর তিনি এখানে ৯ মণ বেগুন আনেন। পাইকারী বাজারে ঢুকলে এর দাম পাওয়া যায়না। বেগুনের আমদানি গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ বেশী হওয়ায় তিনি দাম পাননি । প্রতিকেজি তাকে ২৮ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। তাছাড়া ডুমুরিয়া থেকে এখানে আসতে পরিবহন খরচ বাবদ ৩০০ টাকা গুনতে হয়। যাওয়া আসার খরচের কথা চিন্তা করে তাকে কম দামে এ পণ্যটি বিক্রি করতে হয়। তবে এবার বেগুন চাষের টাকা নিয়ে তাকে বেশ চিন্তিত দেখা যায়।

সোনাডাঙ্গাস্থ পাইকারী কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী ও দয়াল বাণিজ্য ভান্ডারের পরিচালক মো: জাকারিয়া বলেন, বেগুনের সংকট আর নেই। রোজার শুরুতে চাহিদার তুলনায় স্বল্পতা দেখা দেয়। যে কারণে এর দাম বেড়ে গিয়েছিল। এখন সরবরাহ বেশী থাকায় দাম কমে গেছে। মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজানের শুরুতে সংকট দেখা দেয় আর কয়েকটি রোজা পার হলেই সংকট কমে যায় ‌কেন ? এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।

ট্রাক চালক মো: ইসমাঈল হোসেন বলেন, যশোরের মনিরামপুর থেকে এ বাজার পর্যন্ত আসতে খরচ হয় চার হাজার টাকা। সেখান থেকে আসতে ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে হয়। খুলনার প্রবেশদ্বার পথের বাজারে পুলিশকে ১০০ টাকা, সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়কে ১০০ টাকা ও বাইপাস চেকপোষ্টে আরও ১০০ টাকা দিতে হয় তাকে। এরপর রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের চাঁদার টাকা।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, কাঁচামাল নিয়ে বাংলাদেশের কোন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রবেশ করলে কোথাও কোন টাকা দিতে হয়না। কিন্তু খুলনায় ঢুকলে টাকা দিতে হয়। তাছাড়া এ বাজারে কুলিদের বিশেষ একটা প্রভাব রয়েছে। ট্রাক থেকে কোন পণ্য খালাস বা আনলেডিং না করলেও তাদের টাকা দিতে হয়। যার প্রভাব পড়ে কাঁচামালের ওপরে। তখন বাধ্য হয়ে কৃষককে বেশী দরে মাল বিক্রি করতে হয়।

গল্লামারী কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী ওহিদুল বলেন, ৩৫ টাকা দরে পাইকারী বাজার থেকে বেগুন কিনেছেন। আড়তে প্রতিকেজিতে দু’টাকা দিতে হয়। এরপর রয়েছে পরিবহন খরচ। সবমিলিয়ে প্রতিকেজি বেগুন কিনতে ৪০ টাকার মত খরচ হয়। খুচরা ৬০ টাকায় কেন বিক্রি করছেন ? মে‌লে‌নি এর স‌ঠিক জবাব।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!