সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের কুড়িকাহুনিয়া এলাকায় আকস্মিকভাবে দরিদ্র ঋষি সম্প্রদায়ের বাস্তুভিটার উপর দিয়ে ইচ্ছামত ভেড়ীবাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কুড়িকাহুনিয়া এলাকার ঋষি সম্প্রদায়ের দরিদ্র ১১টি পরিবারের পক্ষে আশাশুনি দলিত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই সরকার এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছরের ২০ মে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় বিস্তির্ণ এলাকা। ওই আঘাতে আমাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তিসহ অনেক মানুষের সম্পত্তি কপোতাক্ষ নদের গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। বিলিন হয়ে গেছে আমাদের চাষাবাদসহ সব জমি । শুধু মাত্র বাস্তুভিটাটুকু বাকি রয়েছে। সেখানেই পরিবার পরিজন নিয়ে ১১টি পরিবার অতিকষ্টে বসবাস করে আসছে। ভেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সে সময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সীমানা নির্ধারণ পূর্বক একটি সিডিউল তৈরি করেন। সে অনুযায়ি নির্মাণ কার্যক্রম চলছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তারা ইচ্ছামত উর্দ্ধতন নেতৃত্বের পূর্বের সিডিউল না মেনে আমাদের বাস্তুভিটার উপর দিয়ে ভেড়িবাঁধ নির্মাণ শুরু করেন। এসময় আমাদের গাছপালা থেকে শুরু করে বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলে আমার বাধা দেই। সেকারনে দুইদিন বন্ধ থাকলেও ২৭ ফেব্রুয়ারি পুরোপুরিভাবে আমাদের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে বাঁধ নির্মাণের কথা জানিয়ে দিয়েছেন তারা। অথচ বাঁধটি সামান্য ঘুরিয়ে নিলে বা পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্মাণ করা হলে আমাদের বসতভিটার কোন ক্ষতি হবে না এবং টেকসই বাঁধ নির্মাণেও কোন সমস্যা হবে না।
নিমাই সরকার আরও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসি এবিষয়ে অনুরোধ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন ভ্রুক্ষেপ করছেন না। আমরা অতিশয় দরিদ্র ও গরিব মানুষ। আমাদের সামান্য উপার্জনের উপর পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। আমাদের অন্য কোথাও মাথাগোঁজার মত স্থান নেই বা জমি ক্রয় করারও সামর্থ নেই। এখন সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হলে আমাদের রাস্তা উপর বসবাস করতে হবে।
তিনি প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া এলাকার ১১টি ঋষি পরিবারকে রক্ষা করতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে দলিত সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে একই দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করে তারা। এতে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, কৃষ্ণ মোহন ব্যানার্জী, গোপাল কুমার মন্ডল ও ধীমান সরকার প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টি আই