খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জান্নাতুল ফেরদৌস হত্যা মামলায় আনিসুল হককে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  খুলনা, বরিশালে আজ বৃষ্টি হতে পারে
কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স

অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে টানাটানি : ভোগান্তি রোগীদের

কয়রা প্রতিনিধি

কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল বেলা। জরুরী চিকিৎসা নিতে ছুটে এসেছিলেন রত্না মন্ডল নামে এক অন্ত:স্বত্ত্বা গৃহবধূ। জরুরী বিভাগে প্রাথমিক  চিকিৎসা দেওয়ার পরে গাইনি বিশেষজ্ঞ কোন ডাক্তার না থাকায় কর্মরত চিকিৎসকরা তাঁকে জরুরি ভিত্তিক খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। রোগীর স্বজনরা সরকারি অ্যাম্বুলেন্স খুঁজছে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও দুটির চালক নেই। অপর একটি সকালে রোগী নিয়ে খুলনা মেডিকেলে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটিও ফিরে আসেনি। সেটি খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহম্মেদকে নিয়ে আসার জন্য অপেক্ষা করে সন্ধ্যায় রওনা দিয়েছে। এমন অবস্থায় প্রসূতি নারী ও শিশুর ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে  স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে শিশু পুত্রের জন্ম হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাচ্চা জন্ম নেওয়ায়,  ওজন কম ও ননম্যাচুরেট থাকায়  খুলনায় নিয়ে লাইফ সাপর্টে রাখতে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। চিকিৎসকরা সায় না দেওয়ায় স্বজনদের আবার অপেক্ষা! রাত ৯টার দিকে সিভিল সার্জনবাহী অ্যাম্বুলেন্স কয়রা পৌঁছালে সেই অ্যাম্বুলেন্সেই মাসহ শিশুকে খুলনায় পাঠানো হয়।

খুলনা উপকূলীয় উপজেলার কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেকে এ দৃশ্য শুধু একদিনের নয়। তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকতেও দুটির চালক না থাকায় ৫০ সজ্জা বিশিষ্ট  কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরত্বের জেলা শহর খুলনাতে রোগী আসতে  চরম ভোগান্তির শিকার হন চিকিৎসা প্রার্থীরা।  এছাড়াও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগতো রয়েছেই।

অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যক্তিকাজে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে খোদ সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধেও। সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ যাতায়াতের জন্য এটি ব্যবহার করেন।

রোগীর স্বজন ভবতোষ মন্ডল জানান, তাঁর ভাইয়ের মেয়ে রত্না আকষ্মিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  নিয়ে যাওয়া হয়।  তখন জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। তখন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পেতে দেরি হওয়ায়। হাই প্রেসারের কারণে  বাচ্চার মাথা কিছুটা বের হয়ে আসলে হাসপাতালে  নরমল ডেলিভারি করেন। বাচ্চার ওজন কম ও নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম হওয়ায় বাচ্চা ও মায়ের অবস্থা আশংঙ্কা জনক হওয়ায়  ডাক্তার দ্রুত খুলনাতে নেওয়ার কথা বলে। তখন অনেক কষ্টে একটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি । সেই অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেনের ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি এম্বুলেন্সে অক্সিজেনের ব্যাবস্থা থাকায়  ডাক্তাররা সরকারি এম্বুলেন্সে খুলনাতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে।  তখন সরকারি এম্বুলেন্স পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২/৩ ঘন্টা  দেরি করে চরম সংঙ্কা নিয়ে অতিকষ্টে  খুলনা পৌঁছাতে হয়।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুজিত বৈদ্য বলেন, রোগীর এ্যকলেমশিয়া থাকায় এখান থেকে খুলনা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। তবে ওনারা হাসপাতাল থেকে রোগীকে নিয়ে রওনা করতে দেরী করেন। এক পর্যায়ে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি হয়। তবে বাচ্চা ননম্যাচুরেট ছিলো। মা ও বাচ্চা উভয়েই খারাপ অবস্থায় ছিলো।  তখন দুজনকে অক্সিজেন সার্পোট দিয়ে খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়।

ড্রাইভার আব্দুস সালাম বলেন,  সব সময় রোগী  না হওয়ায় সিভিল সার্জন স্যার মাঝে মধ্যে ভাড়া দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেন।

সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহম্মেদ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘মাঝে মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করি। তবে রোগী ছাড়া ব্যবহার করলে সরকারি ভাড়া দিয়ে ব্যাবহার করি।’

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটা এম্বুলেন্স আর একজন ড্রাইভার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  উপজেলায় একটাই ড্রাইভার পদে পোস্টিং রয়েছে।  তাছাড়া সরকারি বিধান অনুযায়ী একটাই  অ্যাম্বুেলেন্স তেলের খরচ দেওয়া হয়।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!