খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেলের আগুন
  বিসর্জনে আজ শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব
নিরবে পার হলো বিশ্ব মশা দিবস

অভয়নগরে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছে, ১৯ দিনে ১৯ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে

শাহিন আহমেদ, অভয়নগর

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় বৃষ্টির পানি জমতে শুরু করার সাথে সাথেই ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত ১৯ দিনে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। এছাড়া অনেকে যশোর ও খুলনায় চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। কেউ কেউ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতায় এ উপজেলায় মশাবাহিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে শুরু করেছে।

এদিকে, এই ভয়াবহতার মাঝেই একদিন আগে গত ২০ আগস্ট নিরবে পার হয়ে গেছে বিশ্ব মশাদিবস। বিশ্ব মশা দিবসে এ উপজেলার কোথাও জনসচেতনতামূলক কোন কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। ফলে এ নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নওয়াপাড়া পৌরসভার প্রায় সকল ওয়ার্ডেই বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার শিকার হয়। এছাড়া দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং ড্রেনগুলো যথাযথভাবে পরিস্কার না করায় জলাবদ্ধতা বেড়েই চলেছে। ফলে এসকল জলাবদ্ধ অঞ্চলে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু রোগের বাহক ভয়ংকর এডিশ মশা। তাছাড়া শিল্প-বাণিজ্য ও বন্দর নগর নওয়াপাড়ার পৌর এলাকায় জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে অধিকাংশ বাসা বাড়ির সদস্যরা ছাদ বাগান ও ইনডোর প্লান্টের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে এসকল গাছের টবগুলো দিনের পর দিন পরিস্কার না রাখায় এবং পানি পরিবর্তন না করায় এসকল টবে এডিশ মশা বংশ বিস্তারের সুযোগ পাচ্ছে। ফলে দিন গেলেই এ উপজেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া তথ্যমতে, গত ১ আগস্ট হতে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। তারা হলেন, কবির (২২), রিপা (২৮), অধরা (১১), আক্কেল (৬৫) সজল (২৩), লিটন (৪০), শেখ সাদি (২০), আকলিমা (২৪), লতিফা (৩৫), সজিব (১৮), হাজেরা (২৯), সুমাইয়া (১৩), জব্বার (৬৫), হুমায়ুন (১৮), মফিজুল (৩৫), অনিক (২০), রিমন (১২), ওমর ফারুক (৯) ও রাশিদা (৪০)।

এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহামুদুর রহমান রিজভী বলেন, অভয়নগর উপজেলায় সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগী উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। ১৯ দিনে হাসপাতালে ১৯ জন ভর্তি হলেও এর বাইরে অসংখ্য ডেঙ্গু রোগী রয়েছেন বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেকে ডেঙ্গু জ্বরকে সাধারণ জ্বর মনে করে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অধিকাংশ সুস্থ হয়ে উঠছেনও। তবে পরবর্তীতে শারীরিক দুর্বলতাসহ নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন, যাদের শারীরিক অবস্থায় ডেঙ্গু রোগীর লক্ষণ স্পষ্ট।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ডেঙ্গু ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি পৌরকর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের যৌথভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মশক নিধন কার্যক্রম, জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ জলাব্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকার অনুরোধ করেন ডাঃ রিজভী।

এক প্রশ্নে ডাঃ রিজভী বলেন, বিশ্ব মশা দিবসে কোন কর্মসূচি নেয়া হয়নি। তবে আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের দ্বারা সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলমান রেখেছি।

এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজাহ উদ্দীনের সাথে কথা বললে তিনি অভয়নগরের ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানেন না বলে জানান। এসময় তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও তাকে কিছু জানানো হয়নি বা কোন পরামর্শ করেনি।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!