অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন বিলে অপরিকল্পিতভাবে তৈরী হচ্ছে মৎস্য ঘের। কোন ধরণের পরিকল্পনা কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার নিয়ম-নীতি না থাকায় যার যেখানে জমি রয়েছে ইচ্ছা মাফিক তৈরী করছে মৎস্য ঘের। যে কারণে স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছে এলাকার মানুষ।
এলাকাবাসীরা জানায়, ভবদহের স্থায়ী কোন সমাধান না হওয়ায় এমনিতে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়ে রয়েছে। যে কারণে কিছু কিছু বিলের পানি শুস্ক মৌসুমে নিচে নেমে গেলেও জলাবদ্ধ এলাকার অধিকাংশ বিলের জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। ফলে জমি মালিকেরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে জমিতে ফসল ফলানোর আশা বাদ দিয়ে এখন বিকল্প হিসেবে তৈরী করছে মৎস্য ঘের। একদিকে দেশে কমছে ফসলি জমি অন্যদিকে তৈরী হচ্ছে জলাবদ্ধতার আরেক রূপ।
বৃষ্টি মৌসুমে আবাসিক এলাকার পানি গড়িয়ে নিচু এলাকার বিলে গিয়ে পড়ে। কিন্তু বিলে পানি যাওয়ার পথে নতুন অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের। পানি নিষ্কাশনের কোন জায়গা না রেখে জমির মালিকেরা তৈরী করছে ঘেরগুলো।
অনেকে অভিযোগ করেন, একজনের ঘেরের পাড়ে আরেকজন পাড় লাগিয়ে মৎস্য ঘের তৈরী করছে। ফলে পানি যাওয়ার গতিপথ বন্ধ হচ্ছে। আসছে বর্ষা মৌসুমে পানির চাপ বেড়ে গেলে আবাসিক এলাকায় পানি জমে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
আবার অনেক জায়গায় দেখা গেছে কাঁচা-পাকা সড়ককে মৎস্য ঘেরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে অল্পদিনে ওই সড়কের বেহাল দশা তৈরী হয়েছে। কোথাও কোথাও ঘেরের মধ্যে বিলিন হচ্ছে রাস্তা। এ নিয়ে কখনও কখনও এলাকাবাসী বাগ বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়লেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।
ধোপাদী, ডুমুরতলা, সুন্দলী, মশিয়াটির এলাকার নাম না প্রকাশ শর্তে কয়েকজন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঘের ব্যবসায়ীরা তারা ইচ্ছে মত ঘের কেটে পানির প্রবাহ আটকে রাখে। রাস্তার পাশে যে ঘের গুলো আছে। ঘের মালিক পাড় না বেধে মাছ চাষ করে । এতে রাস্তা ভেঙ্গে ঘেরের মধ্যে বিলিন হয়ে যায়।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জমা হলেও কার্যকরী কোন ভূমিকা দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।
এলাকাবাসীর দাবি, মৎস্য ঘের তৈরী করতে হলে সড়ক থেকে নিরাপদ দুরত্ব ও উপরের পানি নিচে নামার জন্য জায়গা রেখে মৎস্য ঘের তৈরী করতে হবে। আর এটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকার মাধ্যমে এবং সকল মৎস্য ঘের কর্তৃপক্ষের তালিকায় রেখে তাদেরকে নিয়ম কানুন জানিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে আইনের আওতায় এনে এ সংকট দূর করতে হবে।
এ ব্যপারে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ আমিনুর রহমান জানান, আমি অভিযোগ পেয়েছি, কিন্তু করোনা কালে তদন্ত করতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। এ ব্যপারে জরুরী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই