৭১ এর যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেদিন
এই সোনার বাংলার তেজদীপ্ত সংগ্রামী দল।
ভেঙে দিয়েছিল দাসত্বের শৃঙ্খল,
পাকসেনাদের অহং,মনোবল।
সেদিন রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল
গ্রামের পর গ্রাম,
শহরের পর শহর।
দাউ দাউ আগুনে পুড়ে ছাই হলো
ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ;
হাটবাজার,ফসলের মাঠ।
শুধু একটি স্বাধীন পতাকার জন্য
সেদিন ঘর ছেড়েছিল দুঃখীনি মায়ের জীবন প্রদীপ,
যাকে সে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে শিখেছিল।
সেই নাগকিশোর ছেলেটি মায়ের আঁচল ছেড়ে
বেরিয়ে এসেছিল রাজপথে ;
হাতে অস্ত্র তুলে,দু’চোখে আগুন জ্বেলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ঐ নরপশু পাকসেনার বিরুদ্ধে!
সেদিন যুদ্ধে নেমেছিল সেই ১৬বছর বয়সী কিশোরী মেয়ে।
৭১ এর অমাবস্যার রাতে
ঐ নরপশুর পিচাশের দল তুলে নিয়ে গিয়েছিল তাকে।
মানুষখেকো কুকুরের মতো কামড়েছিল সেই নব যৌবনা কিশোরী মেয়েটিকে।
কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়েছিল দেহটাকে,
ঐ রক্তপিপাসু হায়েনার দল!
ধর্ষিতা সেই কিশোরী মেয়েটিও স্বপ্ন দেখেছিল একটি স্বাধীন পতাকার!
যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অবলা সেই নারী
যে নারী কখনো কথা বলতো না,
অত্যাচার-নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করতো
কখনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো না।
সেদিন সেই অবলা নারীর মনেও জেগেছিল স্বাধীনতার স্বাদ,
পরাধীনতার শিকল ভেঙে,মুক্ত পাখির মতো আকাশে উড়ার স্বপ্ন!
সন্তানের মুখ না দেখে যে বাবার একটা দিনও কাটতো না;
সেই বাবাও সেদিন তার প্রেয়সী, সন্তানকে রেখে ঘর ছেড়েছিল অজানা যাত্রাপথে,
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিভীষিকাময় সেই রণক্ষেত্রের ময়দানে।
৭১ এর সেই মহান মুক্তিযুদ্ধে এক হয়েছিল
এদেশের মায়ের কোলে লালিত অজস্র মুক্তিপাগল,
স্বদেশপ্রেমীর দল।
অপেক্ষার পর অপেক্ষা আর রক্তের পর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল, শুধু একটি বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে, একটি স্বাধীন পতাকার জন্যে।