বর্ষার পানি বাড়ার সাথে সাথে ডিঙ্গি নৌকার চাহিদা বেড়েছে যশোরের অভয়নগর উপজেলায়। উপজেলার কোথাও কোথাও নৌকাই যেন তাদের একমাত্র ভরসা। যশোরের অভয়নগর উপজেলায় সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে সোনাতলা বাজারের ফারাজী পাড়ায় ৬৫ বছর ধরে ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করে জীবন সংসার চালাচ্ছেন ৮৫ বছর বয়সী জাবের শেখ । বর্ষাকাল আসলেই তিনি নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি প্রতি মৌসুমে ২০ থেকে ২৫ টি ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করেন বলে জানা যায়। আর এসব ডিঙ্গি নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকায়।বর্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এলাকার মৌসুমি জেলেরা নৌকা দিয়ে রাত দিন মাছ শিকারে ব্যস্ত থাকেন। এ এলাকায় নৌকার ব্যবহার হচ্ছে যুগ যুগ ধরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের সোনাতলা বাজারে জাবের শেখ নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দূর-দূরান্তে থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দসই নৌকা এখান থেকে কিনে নিচ্ছেন বা অর্ডার দিচ্ছেন।নৌকা তৈরির কারিগর জাবের শেখ বলেন,আমার বয়স ৮৫ বছর।আমার চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেরা কৃষি কাজ করে সংসার চালায় এবং মেয়েদের বিবাহ দিয়েছি।তিনি আরো জানান,বর্ষাকাল আসলে নৌকার কদর বাড়ে। প্রথম জীবনে যখন নৌকা তৈরি করতাম তখন সময় লাগতো ১ থেকে ২ দিন। বয়স বেশি হওয়ায় আগের মত নৌকা তৈরির কাজ করতে পারিনা। ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করতে আমার এখন সময় লাগে ৩ থেকে ৪ দিন। আমি প্রায় ৬৫ বছর ধরে নৌকা বানাই।
নৌকা বানানোর কারিগর কেনো হলেন এমন প্রশ্নে, জাবের শেখ বলেন, জীবনে প্রথম নৌকা বানাইছি ছোটবেলায় তখন বয়স ছিলো ২০ বছর। তখন শখের বসেই নৌকা বানাইছিলাম। কিন্তু এইটাই তখন থেকে আমার রিজিকের ব্যবস্থা হিসেবে পরিনত হয়েছে। শৈশবের পেশা হওয়ায় তাই এই পেশা ছাড়তে পারিনা।আমার গ্রামটি নদী বেষ্টিত হওয়াতে এখানে ছোটবেলা থেকেই আমি নদী ও নৌকার সাথে পরিচিত। তাই আমি ভাবলাম আমি নৌকাই বানাবো, নৌকার কারিগর হয়েই জীবন কাটাবো।এজন্যই আমি নৌকার কারিগর হলাম।আমার ইচ্ছা জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত নৌকা বানাবো।তিনি আরো বলেন আমার জীবনের প্রথম নৌকা বিক্রয় করেছিলাম ২১ টাকা।আর নৌকা তৈরি করতে আমার ব্যয় হয়েছিলো ১৩ টাকা, লাভ হয়েছিলো ৮ টাকা।
এলাকাবাসি বলেন, জাবের শেখ দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে নৌকা তৈরি করে বিক্রি করে আসছেন। তার অনেক সুনাম রয়েছে নৌকা তৈরিতে।
খুলনা গেজেট/ টি আই