পাঁচ দিন দিনেও খোঁজ মেলেনি করোনার টিকা নিতে গিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে নিখোঁজ হওয়া নবম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রী হিরা আক্তারের। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুশীলন টাইগার পয়েন্ট কেন্দ্রে টিকা নিতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। এ ঘটনায় ২৪ ফেব্রুয়ারি শ্যামনগর থানায় ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
হিরা আক্তার সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের হযরত আলী মোড়লের মেয়ে ও গাবুরা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
এদিকে, নিখোঁজ হিরা আক্তারকে নিয়ে যখন তার পরিবার উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে দিন কাটাচ্ছে, তখন বিষয়টিকে নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি প্রতারক চক্র। ইতিমধ্যে প্রতারণার মাধ্যমে তার পরিবারের কাছ থেকে অর্থও হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
জানা গেছে, নিখোঁজ হওয়ার একদিন পরে ০১৬১২ ৯৯১৭৯৭ নাম্বারের ফোন থেকে হিরা আক্তারের খালার কাছে ফোনে দিয়ে অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, তোমাদের মেয়ের খোঁজ নিতে হলে আমাকে ইম্যুতে অ্যাড করে ভিডিও কলে কথা বলো। এরপর শনিবার বিকাল ৫টায় ০১৭১৪ ৮৭৯৫৪২ নাম্বার থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবিয়ার রহমানের কাছে ফোন করে কুষ্টিয়া থানার পরিচয় দিয়ে বলা হয়, আমাদের কাছে আপনার মেয়ে আছে। ০১৩০৯ ০১০৫১২ নাম্বারে বিকাশ করে কিছু খরচের টাকা পাঠান। আর এসে আপনার মেয়ে নিয়ে যান। এর পর ওই মােবাইলে ২৫০০ টাকা দেওয়ার আধা ঘণ্টা পরে নাম্বারগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে, নিখোঁজ হিরাকে খুঁজে বের করার সকল চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সানওয়ার হুসাইন মাসুম।
প্রসঙ্গত, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জস্থ সুশীলন কার্যালয়ের করোনা টিকা কেন্দ্র থেকে হিরা আক্তার নামে এক মাদরাসা ছাত্রী নিখোঁজ হয়। এর আগে গত বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে ওই ছাত্রী নিখোঁজ হয়।
গাবুরা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা লিয়াকত আলী বলেন, কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার ধার্য দিন ছিল বুধবার (২৩ ফেব্রæয়ারি)। মাদ্রাসা থেকে ২৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে টিকা দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। আটজন শিক্ষক ছিলেন দেখভালের দায়িত্বে। সুশীলন টিকা কেন্দ্রের লাইন ছিল অর্ধ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। এ সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। টিকা দিয়ে শেষ করতে বিকেল সাড়ে ৪টা বেজে যায়। সেখান থেকে নিখোঁজ হয় ওই ছাত্রী। পাশের একটি প্রাইমারি স্কুলে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। খাওয়ার সময় থেকে হিরাকে আর পাওয়া যায়নি।