মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে। এ প্রবাদ বাক্যেটি যশোরে সত্যি হয়ে দেখা দিয়েছে। মাঘ মাসের মাঝামাঝি এসে যশোরে হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে। শীতের দাপটে যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার যশোরে সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। কনকনে হিমেল হাওয়ার দাপট ছিল সারাদিন। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন এই অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ। আবহাওয়া অফিস বলেছে, আগামী ২ ফেব্রুয়ারির পর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই শুরু হয় কনকনে শীত। শুক্রবার সকাল থেকেই যশোরে সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। এরপর শনিবার সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিললেও তেজ তেমন ছিল না। শৈত্যপ্রবাহের দাপটে শ্রমজীবী মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতে ঘরের বাইরে বের হতে পারছে না। জ্বর-কাশিতে বৃদ্ধ থেকে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের দারস্থ হচ্ছেন।
যশোর আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার সকাল থেকে যশোরাঞ্চলে সর্বোচ্চ ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়া ও রাজারহাটে। এ দু’টি স্থানে তাপমাত্রা ছিল সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যশোরসহ আশেপাশে জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। এ সময় ঘন কুয়াশা দেখা যাবে। কনকনে ঠান্ডায় বিভিন্ন এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা পাওয়ার চেষ্টা করে। হাড় কাঁপানো শীতে তাদের কষ্ট ব্যাপকহারে বেড়েছে। কাজে বেরুতে না পেরে পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে ঘরে বসেই কাটাতে হয়েছে। এছাড়া শীতের প্রভাবে সারাদিনই শহরে মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হয়নি।
যশোর শহরতলীর বাহাদুরপুরের ভ্যানচালক কেরামত হোসেন বলেন, তিনি শহরের আরএন রোডের বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। শনিবার শীতে জবুথবু হয়ে খালধার রোডে বসে ছিলেন। তিনি বলেন, সকালে কাজে বের হতে পারেননি। রোদ বের হলে দুপুরের দিকে বেরিয়েছেন। কনকনে শীতে ভ্যান চালাতে পারছেন না। তাই অনেকটা জবুথবু হয়ে বসে আছেন।
বড় বাজারের হাটচান্নি মার্কেটের কাপড়ের দোকানি মোসলেম আলী বলেন, শীতের কারণে সকালে দোকান খুলতে পরিনি। দুপুর ১২টার দিকে দোকান খুলে সারাদিন বসে আছি। কিন্তু কোনো খরিদ্দার নেই, তাই বেচাকেনা হয়নি। এদিন তীব্র শীতের কারণে কেউ দোকানের দিকে আসেনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই