যশোরের কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা রাসেল হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যাকান্ডের দুই মাস পর এ রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। হত্যায় জড়িত দুই যুবককে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এ রহস্য বেরিয়ে আসে।
আটককৃতরা হলো, কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর গ্রামের আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে মাসুদ হোসেন (১৯) ও বিষ্ণুপুর গ্রামের আব্দুর রউফ মোড়লের ছেলে অহিদ হাসান (১৯)। তাদের দখল থেকে উদ্ধার হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা রাসেল হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ৩০ অক্টোবর রাতে ডিবি পুলিশ উপজেলার সাগরদাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করেছে।
যশোর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুপন কুমার সরকার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই তরুণ জানায়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্যই তারা মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা থেকে রাসেলকে হত্যা করে। মৃত্যুর আগে রাসেল একমাত্র মেয়ের ছবি দেখিয়ে জীবন ভিক্ষা চাইলেও তারা রাসেলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তার মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চলতি বছরের ১৭ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চিংড়া গ্রামের ডেপার মাঠের ধানক্ষেত থেকে পৌরসভার সাবদিয়া ওয়ার্ডের মাজিদ মোড়লের ছেলে রাসেল হোসেনের (২৬) মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র রাসেল বিবাহিত ও এক মেয়ের পিতা। রাসেল হোসেন গত ১৬ আগস্ট বিকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ১২টার দিকে তার মোবাইলে পরিবারের লোকজন কল দিয়ে বন্ধ পায়।
বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির একপর্যায়ে রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে উপজেলার গোপসেনা থেকে মোটরসাইকেলটি পাওয়া গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে লোকজনের মাধ্যমে রাসেলের পরিবার জানতে পারে, চিংড়া ডেপার মাঠে একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে রাসেলের মরদেহ শনাক্ত করে তার পরিবার। পরে নিহত রাসেলের বাবা মাজিদ মোড়ল বাদি হয়ে কেশবপুর থানায় এ বিষয়ে হত্যা মামলা করেন।
রাসেল মোবাইল ফোনে শিশু মেয়ের ছবি দেখিয়ে জীবন ভিক্ষা চাইলেও ঘাতক মাসুদ ও অহিদ তাকে ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গলার শ্বাসনালী কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘাতকরা হত্যার কথা চিন্তা করে মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে গোপসানা এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায়। এছাড়া ১০ থেকে ১৫ দিন পর রাসেলের মোবাইল ফোনটি হাসানপুর বাজারের এক মুদি দোকানদারের কাছে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করে।
খুলনা গেজেট/এনএম