যশোরের ঝিকরগাছায় ৪ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে আগুনে ঝলসে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী। এসময় তিনিও অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। পুলিশ তাদের দু’জনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। দগ্ধ পুতুল রাণীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাসপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। থানা পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী প্রদীপকে আটক করেছে। বর্তমানে সে পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গ্রামবাসী সূত্র জানায়, ওইরাতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী পুতুলের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হচ্ছিল। একপর্যায়ে পাষন্ড স্বামী প্রদীপ ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ পুতুল এসময় নিজে বাঁচতে প্রদীপকে জড়িয়ে ধরে। এতে প্রদীপও অগ্নিদগ্ধ হয়। তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। এসময় তারা অগ্নিদগ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রদীপকে আটক করে ও তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহম্মেদ তারেক শামস জানান, রাত ৩টার দিকে দগ্ধ দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। পুতুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। এছাড়া আহত প্রদীপের দুটি হাত, চোয়াল ও মাথার চুল পুড়ে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, আহত প্রদীপ জানিয়েছে, ওইরাতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে পুতুলের সাথে তার গোলযোগ হচ্ছিল। একপর্যায়ে পুতুলর ঘরের বাইরে যেতে চাইলে তিনি বাধা দেন ও দরজা আটকে শুয়ে পড়েন। এতে পুতুল ক্ষিপ্ত হয়ে পাশের ঘরে গিয়ে নিজের শরীরে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তৎক্ষনাৎ তিনি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এতে তার দু’হাত পুড়ে যায়। পরে প্রতিবেশিরা এসে তাদের উদ্ধার করে। প্রদীপ আরো জানান, তিনি পুতুলকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। একবছর আগে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে তিনি পুতুলকে বিয়ে করেন। প্রতিবেশিদের অভিযোগ ঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরাতো শুধু ছেলের বক্তব্য শুনেছি। সে দাবি করেছে তার স্ত্রী নিজে গায়ে আগুন দিয়েছে। মেয়ের বক্তব্য পেলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। আপাতাত প্রদীপকে আটক করে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা। উল্লেখ্য, প্রদীপ সনাতন ধর্ম গ্রহণের আগে আলামিন নামে গ্রামে পরিচিত ছিল।
খুলনা গেজেট/ এমএম