যশোরে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয়ে বিয়ে এবং ৩ জনকে একই অফিসে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মোস্তাক হোসেন রাজ ওরফে বিল্লাল হোসেন নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। রোববার সালমা খাতুন নামে এক নারী আদালতে এ মামলাটি করেছেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন যশোরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত মোস্তাক হোসেন রাজ ওরফে বিল্লাল হোসেন বাঘারপাড়া উপজেলার জয়নগর রায়পুর গ্রামের খোদাবক্স সরদারের ছেলে। অপরদিকে মামলার বাদী সালমা খাতুন ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরআলী গ্রামের শাহাজান আলীর মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মোস্তাক হোসেন রাজ নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ২০২১ সালের ৬ মার্চ সালমা খাতুনের বড়বোন স্বপ্না সুলতানাকে বিয়ে করেন। এর কয়েকদিন পর মোস্তাক হোসেন রাজ জানান, সিআইডি অফিসে ৩ জন লোক নিয়োগ করা হবে। তিনি এ সময় স্ত্রী স্বপ্না সুলতানা, শ্যালিকা সালমা খাতুন এবং ছোট ভায়রা তরিকুল ইসলামকে সেখানে চাকরি পাইয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিলে তারা রাজী হন। চাকরির জন্য ৩ জনের কাছ থেকে তিনি মোট ১২ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর ২২ মার্চ সালমা খাতুন ৫ লাখ টাকা, তরিকুল ইসলাম ৪ লাখ টাকা ও স্বপ্না সুলতানা প্রতারক মোস্তাক হোসেন রাজকে দেন ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন।
পরে মোস্তাক হোসেন রাজ উল্লিখিত ৩ জনের কাছ থেকে এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও আনসার ভিডিপি’র ট্রেনিংয়ের সার্টিফিকেট নেন। টাকা ও সার্টিফিকেট নেয়ার পর চাকরির ভাইবা পরীক্ষার জন্য তাদেরকে দ্রুত ঢাকায় যেতে বলেন। ২৭ মার্চ সকালে সালমা খাতুন ও তার ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলাম বাসে করে ঢাকায় যান। এর আগে ২৫ মার্চ স্বপ্না সুলতানাকে নিয়ে তিনি ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় যাবার পর সিআইডি অফিসের সামনে গিয়ে সালমা খাতুন ফোন করলে তিনি সেখানে আসেন। এ সময় তিনি সালমা খাতুন ও তরিকুল ইসলামকে ঢাকার পপুলার হসপিটালে নিয়ে যান। এখান থেকে তাদের ঢাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর কিছু সময় পর মোটরসাইকেলে করে এক ব্যক্তি সেখানে এলে তাকে ‘ডিআইজি’ হিসেবে পরিচয় করে দিয়ে রাজ বলেন, এই ব্যক্তির মাধ্যমে চাকরি দেয়া হবে। পরে সালমা খাতুন ও তরিকুল ইসলাম আশেপাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মোস্তাক হোসেন রাজ সিআইডি অফিসে চাকরি করেন না এবং সেখানে কোনো লোক নিয়োগও হবে না। মূলত মোস্তাক হোসেন রাজ বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের সংগ্রহ করে পাচারকারীদের হাতে তুলে দিয়ে অর্থ আয় করে থাকেন। এ কথা জানতে পেরে সালমা খাতুন ও তরিকুল ইসলাম কৌশলে সেখান থেকে বের হয়ে যশোরে ফিরে আসেন।
এ ঘটনার পর ফোনে যোগাযোগ করে মোস্তাক হোসেনের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি নানাভাবে ঘোরাতে থাকেন। এক পর্যায়ে সালমা খাতুন চলতি বছরের ১৫ জুলাই তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে মোস্তাক হোসেন রাজ ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এ কারণে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সালমা খাতুন।
খুলনা গেজেট / আ হ আ