সাতক্ষীরায় ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে সততা চর্চায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের অর্থায়নে সততা স্টোর পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কমিশনের অনুবিভাগে (অন্যান্য মনিহারি) অর্থনৈতিক কোডে প্রাপ্ত বরাদ্দ হতে প্রতিটি সততা স্টোরের জন্য ১০হাজার টাকা (ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দপ্রাপ্ত এসব প্রতিষ্ঠানে সততা সংঘ পুনর্গঠন পূর্বক পুনর্গঠনের খরচ সম্বলিত ভাউচার আগামী ৩০ মে’র মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনার উপ-পরিচালকের দপ্তরে প্রেরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
দুদকের পত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা জেলায় ওই পত্র দেওয়া হয়েছে ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতক্ষীরা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পলাশপোল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঝাউডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা ও নবজীবন ইনস্টিটিউট।
আশাশুনি উপজেলার আশাশুনি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আগরদাড়ি রহিমিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলারোয়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, কলারোয়া সরকারি জিকেএমকে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তালা উপজেলার তালা আলী আহম্মেদ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, পাটকেলঘাটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, জাগরনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুমিরা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সমকাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সুভাষিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
দেবাহাটা উপজেলার পারুলিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, দেবহাটা বিবিএমপি সরকারি ইনস্টিটিউশন, সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সেন্ট্রাল হাইস্কুল। কালিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, কালিগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শ্রীকলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ স্বাক্ষরিত একপত্রে সাতক্ষীরায় ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর পুনর্গঠনের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার অজিত কুমার সরকার বলেন, ছাত্রছাত্রীদের মাঝে সততা ও নিষ্ঠাবোধ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনা সৃষ্টি করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘সততা স্টোর’ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ তৈরি জন্য দেশব্যাপী ‘সততা সংঘ’পরিচালিত করছে দুদক। এরই আলোকে সাতক্ষীরায় ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর পুনর্গঠনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার চর্চার লক্ষ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে বিক্রেতাবিহীন সততা স্টোর চালু করা হয়। সততা স্টোর পরিচালনা করবে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি। অর্থায়ন করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মনিটরিং করবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলায় ও মহানগর পর্যায়ে জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি।
এ বিষয়ে দুদকের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, স্কুলের ফাঁকা একটি কক্ষে সততা স্টোর হবে। সেখানে, খাতা, কলম, পেন্সিল, রবার, স্কেল, জ্যামিতি বক্স, রং পেন্সিল, চিপস, বিস্কুটের মতো পণ্য পাবে শিক্ষার্থী। স্টোরের প্রাথমিক অর্থায়ন করবে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমন্বয় করবেন। বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য নির্ধারণ করা পণ্য কিনতে শিক্ষার্থীদের স্টোরে প্রবেশের পূর্বে রেজিস্ট্রারে তার নাম, শ্রেণি ও রোল লিখতে হবে। পণ্যের দাম দেখে সে নিজেই ক্যালকুলেটরে হিসাব করে সাদা কাগজে পণ্যের নাম ও সমপরিমাণ টাকা লিখে একটি নির্দিষ্ট বাক্সে রেখে আসবে। সেক্ষেত্রে সমপরিমাণ খুচরা টাকা সঙ্গে রাখতে হবে। এছাড়া স্টোরে একটি প্রি-অর্ডার খাতা রাখা হবে, যেখানে শিক্ষার্থী তার চাহিদার পণ্য না পেলে প্রি-অর্ডার বুকের অর্ডার দিয়ে আসতে পারবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড