সাতক্ষীরায় বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমনের হার ও উপসর্গে মৃত্যুর সংখা। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ জানুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে জেলায় ৩০ জানুয়ারি রোববার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৮ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৭৯৪ জন।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলো, সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার নছিমাবাদ গ্রামের মৃত ববার উদ্দীনের আব্দুল গফুর (৬০) ও সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার আছাদুল ইসলামের স্ত্রী লাইলী খাতুন (৩০)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি ও ২৪ জানুয়ারি তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ জানুয়ারি ভোর রাত আড়াইড়া ও বিকাল ৫টার সময় তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ৬৫ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১২৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এর একদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৪৮ দশমিক ০৩ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৫৬ জন রোগী।এর মধ্যে ৮ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ৪৮ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৩ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৮৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৫ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৪০ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ২০ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ২৯০ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮৪৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ১২ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৩৫৭ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ৮ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৩৪৯ জন। জেলায় প্রথম থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৮ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৭৯৪ জন। জেলায় গড় সংক্রমনের হার ২০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৯১ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮৯ হাজার ৮৯৭ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১২ হাজার ৭৫২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৭ লক্ষ ৯৮ হাজার ৯০৫ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২২ হাজার ৮৪৬ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৩ হাজার ৪৪ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৫০ জন। এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৯ হাজার ৪৩৪ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এপর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ২১ হাজার ৫৪১ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ১১ হাজার ৮৬৪ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৫ জনকে।
খুলনা গেজেট/এনএম