সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে চার নারীসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সমাকে) হাসপাতালে চার নারীসহ ছয় জন ও বেসরকারি ক্লিনিকে ২ জন এবং করোনা আক্রান্ত একজন খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা পুটিমারী গ্রামের জিয়াদ আলীর ছেলে মোঃ নুর হোসেন (৬০), একই উপজেলার শ্বেতপুর গ্রামের মুজিবর রহমানের স্ত্রী আমেনা বেগম (৮০), কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের আনছার আলীর স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৬০), দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন (৩৫), সদর উপজেলার বাঁকাল গ্রামের মৃত ফজর আলীর স্ত্রী সোহেলা খাতুন (৩৫) ও একই উপজেলার নলকুড়া গ্রামের শহিদ হোসেনর ছেলে তৌহিদ হোসেন (৬৫)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা নানা উপসর্গ নিয়ে ৭ জুন বিকাল ৩টার দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন জেলার আশাশুনি উপজেলার পুটিমারী গ্রামের মোঃ নুর হোসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ১৫ জুন বেলা পৌনে ২টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন আশাশুনির শে^তপুর গ্রামের মুজিবর রহমানের স্ত্রী আমেনা বেগম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুন রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে গত ৬ জুন সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের আনছার আলীর স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুন ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে করোনার একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন ১৯ জুন রাত ১২ টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে নিবিড় পরিচার্যা ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুন বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে গত ১৮ জুন বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন সদর উপজেলার বাঁকাল গ্রামের মৃত ফজর আলীর স্ত্রী সোহেলা খাতুন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুন ভোর রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা নানা উপসর্গ নিয়ে ১০ জুন বেলা ১১ টা ২৮ মিনিটের দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন সদর উপজেলার নলকুড়া গ্রামের তৌহিদ হোসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুন ভোর সাড়ে ৭টার দিকে দিকে তিনি মারা যান।
করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা শহরের পৃথক দু’টি বেসরকারি ক্লিনিকে মারা গেছে আরো দুই জন এবং করোনা আক্রান্ত সাতক্ষীরার এক ব্যক্তি খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
এনিয়ে, জেলায় এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬২ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্ততঃ ২৮৩ জন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকার জানান,গত ২৪ ঘন্টায় সামেক হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ জন ও শহরের বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো ২জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া করোনা অঅক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন একজনকে খুলায় পাঠানোর পর সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা এসব মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের মরদেহ দাফনের জন্য বলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই