‘মাদককে না বলুন, মাদক মুক্ত সমাজ গড়ন’ শ্লোগানকে হৃদয়ে ধারণ করার শর্তে এক আসামীকে ৬ মাসের দেওয়া সাজা স্থগিত করে প্রবেশনে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক মোঃ সালাহ উদ্দীন এই আদেশ দেন। প্রবেশনে মুক্তি পাওয়া আসামী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা কাজীপাড়া গ্রামের মৃত তাছের আলী মিস্ত্রীর ছেলে মোঃ খায়রুল ইসলাম (৩৬)।
জানা যায়, খায়রুল ইসলাম ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর সাতক্ষীরা সদর থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলার বিচারে আসামী খায়রুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিচারক তাকে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। এসময় আসামী নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তাকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য আদালতের কাছে নিবেদন করেন। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সালাহ উদ্দীন বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামী খায়রুলের জীবনের প্রথম অপরাধ বিবেচনায় তাকে জেল খানায় দাগী আসামীদের সংস্পর্শে না রেখে শর্ত সাপেক্ষে নিজ বাড়িতে পারিবারিক পরিবেশে থেকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ করে দেন।
এ সময় বিচারক আসামীর দেয়া ৬ মাসের সাজা স্থগীত করে জেলা প্রবেশন অফিসারের জিম্মায় প্রবেশনে মুক্তির আদেশ দেন। একই সাথে আসামীকে বেশ কিছু শর্তও মেনে চলার নির্দেশ দেন আদালত। শর্তগুলো হচ্ছে, মাদকের সংস্পর্শে যাওয়া যাবেনা এবং মাদক সেবন করা যাবেনা, মাদকের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে হবে এবং এ সংক্রান্ত ২০টি লিফলেট কম্পিউটারে টাইপ করে জনসমাগমস্থলে লাগিয়ে দিতে হবে, নিজ এলাকায় ৫টি ফলজ বৃক্ষ রোপণ করতে হবে, বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে হবে, ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা করাতে হবে এবং মায়ের প্রতি যত্নশীল আচরণ করতে হবে।
আদালতের দেওয়া ওই সব শর্ত পালনে আসামী ব্যর্থ হলে তার প্রবেশন বাতিল হবে এবং পুনরায় তাকে সাজা ভেগ করতে হবে বলেও বিচারক তাঁর আদেশে উল্লেখ করেন। আসামী ওই সব শর্ত মানছেন কিনা জেলা প্রবেশন অফিসার প্রতি ৩ মাসে ২বার করে আদালতে রিপোর্ট দিবেন। রিপোর্ট আদালতের কাছে সন্তোষজনক হলে সেক্ষেত্রে আসামীকে ৬ মাসের সাজা থেকে চুড়ান্তভাবে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। আদালতের এই আদেশের বিষয়টি বেঞ্চ সহকারী নিশ্চিত করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই