সাতক্ষীরার উপকূলের লবণাক্ত মাটি ও পানিতে বিনা-৯ জাতের সরিষার চাষ হাসি ফুটিয়েছে কৃষকদের মুখে। দূর্যোগ ও জলাবদ্ধতার প্রতিকূলতা রোধ করেও মাত্র ৯০ দিনে চাষীদের ঘরে উঠছে এই সরিষা। এই স্বল্পতম সময়ে চাষীরা পেয়েছেন বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ মণ বিনা-৯ জাতের তেলবীজ।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, চলতি বছর সাতক্ষীরায় প্রায় ৮০০ বিঘা জমিতে বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। এজন্য কৃষিবিভাগ ১০০ জন কৃষককে বীজ, সার ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। বোরো ও আমন চাষের মাঝে যে সময়টুকু পাওয়া যায় সেটুকুই বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষে ব্যবহার করছেন কৃষকরা। সাতক্ষীরার মাঠে মাঠে এই জাতের চাষের ফলে তারা অনেকাংশে লাভবান হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের হাড়দ্দহা গ্রামের কৃষক ইউনুচ আলী জানান, চারদিকে লবণাক্ত পানির মাছের ঘের তার ওপর অসময়ের বৃষ্টিতে সরিষা ক্ষেত ডুবে ছিল ১০ থেকে ১২ দিন। এতে ফলন কম হবার আশংকা থাকলেও বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টেটাই।
লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা এমনকি ঘাস ও আগাছার মধ্যেও ফলন অনেক বেশি। বিনা-৯ জাতের সরিষা অন্য যেকোন জাতের তুলনায় ফলন বেশি দেয়। পানিতে ডুবে থাকলেও এই গাছ মরে যায় না। এতে সার খুব কম লাগে। তাছাড়া এর রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি।
তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে তারা বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ মণ সরিষা পেয়েছেন। বেশিমাত্রায় সার প্রয়োগের কোন প্রয়োজন নেই। খানিকটা কাদামাটিতে ভিজে থাকা মাঠও বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ উপযোগী। ঘাস ও আগাছার প্রতিকূলতা সহ্য করেও উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা অন্য যেকোন জাতের তুলনায় অধিক মাত্রায় ফলন দিয়েছে।
বিনা-৯ এর সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. বাবুল আখতার বলেন, সাতক্ষীরা বিনা-৯ জাতের সরিষার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। অনেক প্রতিকূলতা সহ্য করতে পারে। এ বছর সাতক্ষীরায় ৮০০ বিঘা জমিতে এই চাষ হয়েছে। এবছর ফলন বেশ ভাল হয়েছে। আগামীতে কৃষকদের আগ্রহ অনুযায়ী তা আরও স¤প্রসারণ করা হবে।