সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান শাহাজাদার বিরুদ্ধে ৯০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে । উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের দাউদ আলী গাজীর ছেলে তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার কলারোয়া আমলী আদালত ৪ এ মামলাটি করেন।
বিচারক মহিদুল হাসান মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাতক্ষীরা সিআইডির সহকারি পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সভাপতি শাহাজাদা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মৃত আশরাফুজ্জামান এর ছেলে ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরিকুল ইসলাম কলারোয়া থানার সামনে দাউদ মটর নামে একটি মোটরসাইকেল শোরুম খুলে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। তার কাছে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের নামে ভাইচ চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা আছাদুজ্জামান শাহাজাদা চাঁদা দাবী করে আসছিলেন ।
২০২০ সালে কাজী শাহাজাদা বাদীর দোকান থেকে এফজেড (মূল্য ১লক্ষ ৬০ হাজার) মটর সাইকেল নিয়ে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। বাকি টাকা পরে দেয়ার অঙ্গিকার করলেও টাকা না দিয়ে তাল বাহানা করতে থাকেন। এছাড়া ১০ মার্চ যুবলীগ নেতা ফের দাউদ মোটরস্ এর শোরুম থেকে আরো একটি এফজেড (মূল্য ১লক্ষ ৬০ হাজার) মটর সাইকেল বাকিতে নিয়ে যায়। পরে টাকা চাইতে গেলে বিবাদী বাদীকে খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে। এসময় বাদীর নিকট উল্টো ৩ লাখ টাকা পাবে এমন কথা বলে তাকে শাসাতে থাকে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে কাজী শাহাজাদা বাদীকে ফাঁদে ফেলার জন্য পায়তারা শুরু করে। এক পর্যায়ে ২৮ এপ্রিল মীমাংসার কথা বলে বাদী তরিকুল ইসলামকে তার ডেরায় কৌশলে ডেকে নিয়ে মারপিট করে একাধিক সাদা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও দুটি সাদা ব্যাংক চেকে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয় যুবলীগ নেতা শাহাজাদা।
বিষয়টি বাদী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ তার স্বজনদের জানালে ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে ৭ মে তার ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে তরিকুলের বাড়িতে গিয়ে ৯০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে জীবন নাশের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করতে থাকে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শাহাজাদা ও তার বাহিনীর হাত থেকে তরিকুলকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা কাজী আসাদুজ্জামান শাহজাদা বলেন, তরিকুল তার ব্যবসায়িক পার্টনার। মামলার বাদী তরিকুলের কাছে তিনি টাকা পাবেন। প্রমান স্বরুপ স্ট্যাম্প ও চেক আছে।
উল্লেখ্য, জালিয়াতির মাধ্যমে গোপীনাথপুরের কুন্ডু পরিবারের জমি দখল, চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাজী আসাদুজ্জামান শাহাজাদা ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি দু’টি সিআর ও একটি জিআর মামলায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন এবং রাতে কলারোয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সে সময় শাহাজাদার বাড়ি থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৪টি কাগজপত্রহীন মোটরসাইকল, কিছু নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই উদ্ধার করে পুলিশ।
খুলনা গেজেট/ এসজেড