সাতক্ষীরায় মুজিব শতবর্ষে বিনামূল্যে এক লাখ বৃক্ষরোপন ও করোনাকালে এক লাখ দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে সবজি বিতরণ করে প্রশংসায় কুড়িয়েছেন সাতক্ষীরার নব্বইয়ের দশকের ছাত্রনেতা, সেঞ্চুরি একাডেমির পরিচালক ও গ্রিন এনভায়র্নমেন্ট মুভমেন্ট’র সভাপতি এজাজ আহমেদ স্বপন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে তিনি নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, মুজিব শতবর্ষে তাঁর টার্গেট বিনামূল্যে লক্ষাধিক গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ। এউপলক্ষে প্রতিদিন হাজারো ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ করছেন তিনি। বিতরণকৃত গাছের মধ্যে রয়েছে আম, মেহগনি, অর্জুন, বহেরা ও জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতি ফুল গাছ। মুজিব শতবর্ষে এক লক্ষ গাছের চারা বিতরণের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ৬০হাজারের বেশি চারা বিতরণ ও রোপন করা হয়েছে।
সাতক্ষীরার বাইরেও তিনি রাজধানী ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলায় নিজ খরচে ট্রাকের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার গাছের চারা। সাতক্ষীরায় উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে সড়ক ও নদীর ধারে, গ্রামীন রাস্তার পাশে, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, ক্লাব, সমিতিসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় রোপন করছেন ফলজ, বনজ, ওষধী ও শোভাবর্ধনকারী গাছ।
জেলার বিভিন্ন নার্সারি থেকে এসব গাছের চারা কিনে নিজ খরচে পরিবহনের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। জেলায় ইতোমধ্যে ২০ হাজার এবং জেলার বাইরে ৪০ হাজার গাছের চারা পৌঁছে দিয়েছেন। গাছের চারা বিতরণ অব্যাহত আছে। মুজিব বর্ষে তিনি লক্ষাধিক গাছের চারা বিতরণ ও রোপনের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে চান। এজন্য যেখানে গাছ লাগানোর উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে সেখানেই তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন গাছের চারা।
এছাড়া করোনাকালে এক লক্ষ পরিবারের মাঝে সাতক্ষীরার এজাজ আহমেদ স্বপন বিলিয়েছেন টাটকা শাক-সবজি। এই করোনাকালে দরিদ্র মানুষকে সহযোগিতা করতে তিন মাসের অধিক সময় ধরে দৈনিক প্রায় এক হাজার দরিদ্র মানুষকে প্রতিদিন বিনামূলে সবজি বিতরণ করছেন। তার প্রতিষ্ঠান সেঞ্চুরি একাডেমির মাধ্যমে জেলায় এভাবে এক লক্ষ দরিদ্র অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করে সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
করোনাকালে দেশের দরিদ্র মানুষ বিশেষ করে শ্রমজীবী নারী-পুরুষ যারা দিন আনে দিনে খায় তারা পড়েন বেশি বিপদে। করোনাকালে সরকারি, বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন মানুষকে চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপণ্য বিতরণ করেন ঠিক তখনই স্বপন চিন্তা করেন মানুষের ভাতের সঙ্গে প্রয়োজন তরকারি ও সবজির। তাই শুরু করেন সবজি বিতরণ।
এ প্রসঙ্গে এজাজ আহমেদ স্বপন জানান, ২০০০ সালে বন্যায় সেঞ্চুরি একাডেমির ব্যানারে তিনি রুটি বানানো কর্মসূচি চালু করেন। সেখান থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা রুটি নিয়ে যেতেন। একই সময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফ্রি কোচিং, বিনামূল্যে খাতা-কলম বিতরণ ও পরীক্ষার ফিস প্রদান করতেন। সে সময়ের কার্যক্রম সাতক্ষীরাবাসীর হৃদয় আকর্ষণ করেছিল। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনাকালে প্র্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষকে দিয়েছেন তাজা শাক-সবজি। প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি শাক-সবজি ক্রয় করে তা বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের মাঝে। এক লক্ষ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যের এই সবজি বিতরণ করেন। স্বপন আরও জানান, মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর নামই মানবিকতা। মানুষের যেকোনো দুর্যোগে পাশে দাঁড়ানোর প্র্রত্যয় ব্যক্ত করেন মানবতার এ ফেরিওয়ালা।
খুলনা গেজেট / এমএম