সাতক্ষীরায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে খাস সম্পত্তি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া ৬ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার ও নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা। বুধবার (১৬ মার্চ) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলার বাঁকাল বারুইপাড়া গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর আমি সেলাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। সম্প্রতি কুখরালী এলাকার মোসলেমের ছেলে মহিদুল ইসলাম অল্প খরচে আমাকে ৩/৪ বিঘা খাস জমি পাইয়ে দিবেন বলে প্রস্তাব দেন। জমিটা পেলে আমার সংসার পরিচালনায় সুবিধা হবে ভেবে সরল বিশ্বাসে আমি তার কাছে তিন দফায় মোট ১ লাখ ৪১ হাজার টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে মহিদুল আমাকে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা রাজু স্যারের বিকাশে টাকা দিতে হবে তাহলে সকল কাগজপত্র ঠিক করে দেবে। এরপর রাজু স্যারের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ০১৮১৩-৬৭৮৭৫২ এবং ০১৭৬৩ ৬১৬৬৯০ নম্বর আমাকে দেয়। ওই রাজু নামের কথিত অফিসার আমার সাথে প্রায়ই কথা বলতো। রাজুর বিকাশ নম্বরে কাগজপত্র ছাড়ানোর জন্য আমি বিভিন্ন সময়ে ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করি। এখন রাজুর নম্বরে ফোন দিলে জনৈক মহিলা ফোন রিসিভ করে বলেন, রাজু স্যার মারা গেছেন। উপায়ন্তর না পেয়ে আমি মহিদুলের কাছে গিয়ে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৯৩৬ ০৪৫৩৫৬ এবং ০১৯১২ ৩২৫৭৮৫ এর মোবাইলে ফোন করে টাকা ফেরত চাইলে সে তালাবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে মহিদুলের বাড়িতে গেলে আমাকে কোন টাকা দিতে পারবে না মর্মে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং কেউকে বিষয়টি না জানানোর জন্য হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে।
আনোয়ারা বেগম আরো বলেন, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীকে হারিয়ে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এখন না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। সরলতার সুযোগে আমাকে ঠকিয়ে এতগুলো টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওই মহিদুল এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ আমি বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ দেনা করে ওই টাকাগুলো প্রতারক মহিদুলের কাছে তুলে দিয়েছিলাম। সে আমাকে ঠকিয়ে পথে বসিয়েছে। আমার একমাত্র ছেলে একটি কোম্পানিতে চাকুরি করে যা উপার্জন করে তা দিয়ে সংসার পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য।
তিনি আরো বলেন, ওই মহিদুল টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা উল্টো আমাকেসহ আমার সন্তানকে খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। এঘটনায় আমি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছি। একদিকে টাকা হারিয়ে আমি দিশেহারা অন্যদিকে ওই প্রতারকের খুন জখমের হুমকিতে আমি এবং আমার সন্তান এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি ওই প্রতারক চক্রের কবল থেকে তার টাকা উদ্ধার এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই