খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

সাতক্ষীরায় চার দফায় শান্তিপূর্ণ হলেও আশাশুনিতে সহিংসতায় শঙ্কিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় ৪ দফায় ৬১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে আরো ১৬টি ইউনিয়নের নির্বাচন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগের নির্বাচন গুলো অবাধ ও সুষ্ঠু করতে কঠোর ভূমিকা পালন করে ইতিমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু ৫ দফায় আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ৫ দফায় আগামী ৫ জানুয়ারি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ১১টি, শ্যামনগর উপজেলার ৩টি ও কলারোয়া উপজেলার ২টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

জেলায় এর আগে অনুষ্ঠিত চতুর্থ দফা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে অনেকে বলেছে দেশ স্বাধীনের পর তারা এত ভালো নির্বাচন দেখেনি। এমন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের চেয়েও নির্বাচন অনেক ক্ষেত্রে ভালো হচ্ছে এমন কথাও বলেছেন অনেকে। কিন্তু ৫ দফা নির্বাচনে সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে নির্বাচনী সহিংসতা। নির্বাচনে আশাশুনির খাজরা ও আনুলিয়া ইউনিয়নে প্রায়ই ঘটছে সহিংসতার ঘটনা। নির্বাচনের মধ্যেই শ্রীউলা ইউনিয়নে ঘটেছে হত্যার ঘটনা।

প্রতাপনগরেও ছোটখাটো হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনের দিন যতই নিকটে আসছে ততই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। প্রচার প্রচারণার নামে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিয়ে সাধারণ জনগণের মনে ভীতি সৃষ্টি করছে অনেক প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরা। এই উত্তেজনা প্রশমনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনি কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বড় ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন সাধারণ জনগণ। একই সাথে মিথ্যে মামলা দিয়ে শতশত লোককে এলাকা ছাড়া করা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

এদিকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং ভোটের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন অধিকাংশ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী।

খাজরা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ওহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শোডাউন দিয়ে গ্রামে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে গদাইপুর গ্রামে নৌকা প্রতীকের প্রাথী শাহনেওয়াজ ডালিমের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে ডালিমের নেতৃত্বে তার শান্তিপূর্ণ শোডাউনে হামলা চালানো হয়। এতে সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল কুদ্দুস মোল্যাসহ তার ১০/১২ জন কর্মী সমর্থক গুরুতর আহত। এ ঘটনার কয়েকদিন পর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার তিনজন কর্মীকে ভ্যান থেকে নামিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া প্রতিনিয়ত আমার কর্মী সমর্থকদেরকে মারপিট করাসহ নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে।

এদিকে ৯নং আনুলিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রুহুল কুদ্দুস বলেন, নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার নেতা কর্মীর উপর হামলা করা হয়েছে ৫ দফা। এতে আনারস প্রতীকের পক্ষের প্রায় ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এছাড়াও বছরের প্রথম দিনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৫টি বাড়ি, দুটি দোকান ভাংচুর করা হয়। এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইল ফোন। তাকে সহ তার ২৪ কর্মী সমর্থকদের নামে মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে।

প্রতাপনগর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরে আলম ছিদ্দিকী বলেন, তাকে সহ তার কর্মী সমর্থকরা নির্বেঘ্নে প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না। প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা তাকে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছেন। তিনি শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের দাবি জানান।

শ্রীউলা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র দিপংকর জানান, তার কর্মী সমর্থকদের মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তাদরেকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। এখানে একজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তার দায়ভার অন্যের উপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিয়ে তারা দারুণভাবে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ গোলাম কবির বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করতে প্রতিটি ইউনিয়নে আমাদের টিম কাজ করছে। কোথাও সহিংসতার খবর পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমার দৃষ্টি এড়িয়ে কেউ যদি কোন প্রকার সহিংসতা করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!